হরিয়ানার গুরগাঁওয়ে বাঙালি শ্রমিকদের হেনস্থার খবরে কাঁপছে কাটোয়া ২ ব্লকের ঘোড়ানাশ গ্রাম। এই গ্রামের প্রায় ১৫ জন পরিযায়ী শ্রমিক বর্তমানে গুরগাঁওয়ে কাজ করছেন। কেউ ওলা বা উবেরের বাইক চালান, কেউ হোটেলে কিংবা অন্য কোথাও পরিচারিকার কাজ করেন।
সম্প্রতি তাঁদের মধ্যে অনেকেই ঘোড়ানাশ গ্রামে বাড়িতে ফোন করে জানিয়েছেন, সেখানে বাঙালিদের নিশানা করা হচ্ছে। বাংলায় কথা বললেই তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হচ্ছে, কেড়ে নেওয়া হচ্ছে মোবাইল। সেই আতঙ্কেই দিনের পর দিন স্বাভাবিক কাজ করতে পারছেন না তাঁরা। এই খবর শুনে ঘোড়ানাশ গ্রামে পরিবারের লোকজনও চিন্তায় রয়েছেন।
advertisement
আরও পড়ুন: জলে ভাসছে সিভিক পুলিশ বিশ্বজিতের দেহ! কীভাবে মৃ*ত্যু? ঘনাচ্ছে রহস্য
দিলীপ হাজরা নামের এক গ্রামবাসী বলেন, “আমার ছেলেও ওখানে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করে বেশ কয়েক বছর ধরে। কিন্তু ছেলে ফোন করে বলেছে ওখানে নাকি ধরপাকড় চলছে। তাই ছেলেও চিন্তায় আছে , আমরাও চিন্তায় রয়েছি। আমরা গ্রামে পার্টি অফিসে সবটা জানিয়ে এসেছি।” ঘোড়ানাশ গ্রামের বাসিন্দা ও পরিযায়ী শ্রমিক গোবিন্দ হাজরা ফোনে জানান, তাঁরা খুব আতঙ্কে রয়েছেন। তাঁদের চোখের সামনেই বাঙালিদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে। বেধড়ক মারধর করা হচ্ছে, বাংলায় কথা বললেই গালিগালাজ করছে এমনকী ফোনও কেড়ে নিচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘আমি অনাথ, টিকিট নেই, আপনার সঙ্গে নিন’, ট্রেনে উঠে কোথায় গেল বাংলার মেয়ে? নাসিক থেকে এল বড় খবর!
তিনি তাঁর স্ত্রী এবং মেয়েকে নিয়ে সেখানে চিন্তায় রয়েছেন। এই ঘটনার জেরে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও। উপযুক্ত নথি চেয়ে এখন পঞ্চায়েতের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তাঁরা। অনেকেই অভিযোগ করছেন, পরিচয়পত্র থাকলেও সেগুলিকে মান্যতা দেওয়া হচ্ছে না।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই কেতুগ্রামের চর সুজাপুর গ্রামের বহু পরিযায়ী শ্রমিককে ওড়িশায় কাজ করতে গিয়ে আটক করা হয়েছিল। এবার সেই আতঙ্ক ছড়াল কাটোয়াতেও। একের পর এক ঘটনার জেরে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা বাড়ছে। প্রশ্ন উঠছে শুধু বাংলা ভাষা বলার অপরাধেই কি এমন নির্যাতনের শিকার হতে হবে বাঙালিদের? এখন দেখার বিষয় কতদিনে এই স্থায়ী সমস্যার সমাধান হয়।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী