বাগুইআটি কাণ্ডকে হাতিয়ার করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য সরকারের উপরে চাপ বাড়াতে শুরু করেছে বিজেপি সহ বিরোধী দলগুলি৷ এ দিন সকাল থেকেই বাগুইআটি থানার বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছে বিজেপি-র মহিলা মোর্চার কর্মীরা৷ আজ দুপুরেই বাগুইআটি থানায় যাওয়ার কথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর৷ বিজেপি-র পাশাপাশি এ দিন বাগুইআটি থানার বাইরে মিছিল করে বামেরাও৷ আজ বিকেলেই বাগুইআট থানায় যাওয়ার কথা সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের৷
advertisement
গত ২২ অগাস্ট নিখোঁজ হয় বাগুইআটির বাসিন্দা দুই কিশোর অতনু দে এবং অভিষেক নস্কর৷ অভিযোগ, দুই কিশোরকে ওই দিন রাতেই খুন করে অপহরণকারীরা৷ দুই কিশোর নিখোঁজ হওয়ার পরের দিনই অর্থাৎ ২৩ অগাস্ট বাগুইআটি থানায় অভিযোগ দায়ের করে দুই কিশোরের পরিবার৷
এর পর যথাক্রমে ২৩ এবং ২৫ অগাস্ট ন্যাজাট এবং হাড়োয়া এলাকা থেকে দুই কিশোরের দেহ উদ্ধার করে বসিরহাট পুলিশ জেলার অন্তর্গত দু'টি থানার পুলিশ৷ অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে অতনু এবং অভিষেকের দেহ দু'টি ময়নাতদন্তের পর বসিরহাট পুলিশ মর্গেই পড়ে ছিল৷ এর মধ্যে থানা, কাউন্সিলর থেকে শুরু করে ভবানী ভবন পর্যন্ত ছোটাছুটি করেও সুরাহা পায়নি নিখোঁজ দুই কিশোরের পরিবার৷ কারণ পুলিশ তখনও জানত না দুই কিশোরকে খুন করা হয়েছে৷
পুলিশের এই সমস্ত গাফিলতির অভিযোগ গতকালই সামনে আসে৷ শেষ পর্যন্ত অপহরণকারীদের পাঠানো এসএমএস-এর সূত্র ধরে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে বাগুইআটি থানার পুলিশ৷ তার পরেই খুনের কথা জানতে পারে তারা৷ কিন্তু এ দিন যে খবর সামনে এসেছে, তা রীতিমতো চাঞ্চল্যকর৷
সূত্রের খবর, মাত্র দু' দিনের ব্যবধানে দুই কিশোরের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় সন্দেহ হয় বসিরহাট জেলা পুলিশের কর্তাদের৷ এর পরই লাগোয়া বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটকে দুই কিশোরের মৃতদেহের ছবি পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলেই দাবি ওই সূত্রের৷ বসিরহাট পুলিশের পক্ষ থেকে বিধাননগর কমিশনারেটকে অতনু এবং অভিষেকের মৃতদেহের ছবি পাঠানো হয়ে থাকলে, তার পরেও কেন বাগুইআটি থানার পুলিশ তাদেরকে চিহ্নিত করতে পারল না, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷ উল্টে সেই সময় প্রায় প্রতিদিনই দুই কিশোরের পরিবারকে ছেলেদের ফিরিয়ে দেওয়া এবং অভিযুক্তদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়ে গিয়েছে বাগুইআটি থানার পুলিশ৷
অপহরণের দিনই ওই দুই কিশোরকে খুন করা হয়৷ তখনও পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেনি দুই ছাত্রের পরিবার৷ ফলে দুই কিশোরকে বাঁচানোর সুযোগ ছিল না পুিলশের সামনে৷ কিন্তু আরও আগে বাগুইআটি থানা সক্রিয় হলে হয়তো অভিযুক্তদের আরও আগে ধরা যেত৷ কারণ মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরী এখনও ফেরার৷ সবমিলিয়ে বাগুইআটি কাণ্ডে ফের একবার মুখ পুড়ল পুলিশের৷ বিভিন্ন দুর্নীিত ইস্যুতে চাপে থাকা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার নতুন অস্ত্রও পেয়ে গেল বিরোধীরা৷