দরিদ্র চাষি পরিবারের সন্তান ববিতার বাবা আবেদ আলি সরদার স্বপ্ন দেখতেন খেলাধুলায় বড় কিছু করবেন। অর্থাভাবে নিজে স্বপ্নপূরণ করতে না পারলেও মেয়েকে নিয়ে সেই স্বপ্ন আজ বাস্তবের পথে।
মা আনোয়ারা বিবিও পাশে থেকেছেন মেয়ের প্রতিটি লড়াইয়ে। ছোট থেকেই খেলাধুলায় ঝোঁক ছিল ববিতার। প্রথমে অ্যাথলেটিক্সে নাম করলেও পরে মন দেন ক্যারাটেতে। টানা আট বছরের কঠোর সাধনা তাঁকে এনে দিয়েছে ব্ল্যাক বেল্ট। রাজ্য ও রাজ্যের বাইরে একাধিক প্রতিযোগিতায় পদক জিতে বাংলার নাম উজ্জ্বল করেছে এই তরুণী।
advertisement
সম্প্রতি পাঞ্জাব-হরিয়ানায় ৫০ কেজি বিভাগে প্রথম স্থান দখল করে ববিতা। আর সেই জয়ের হাত ধরেই ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিতব্য এশিয়ান গেমসের যোগ্যতা নির্ণয় প্রতিযোগিতায় ডাক পেয়েছেন তিনি। সেই প্রতিযোগিতার জয়ই তাকে পৌঁছে দেবে ২০২৬ সালের জাপানের আইচি প্রিফেকচারের মঞ্চে।
ববিতার এই সাফল্যে গর্বিত তাঁর পরিবার ও গ্রামবাসীরা। বাবা আবেদ আলির কথায়, “নিজে খেলতে পারিনি, তাই মেয়ের মধ্যেই স্বপ্ন দেখেছিলাম। আজ মেয়ে সেই স্বপ্ন পূরণ করছে।” নবীনচন্দ্র মণ্ডল হাই স্কুলের শারীরশিক্ষার শিক্ষক সন্দীপ দাস জানালেন, “ছোটবেলা থেকেই ওর মধ্যে অদম্য জেদ দেখেছি। প্রতিকূলতাকে জয় করে যেভাবে এগিয়েছে, তা সত্যিই অনুপ্রেরণা।”
শুধু পরিবার বা শিক্ষক নয়, গ্রামের বিশিষ্টজনরাও হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন ববিতার পাশে। মনিরুল গাজী, রফিকুল গাজী, হাকিম শেখরা আশ্বাস দিয়েছেন, “বিদেশযাত্রার খরচ বা পাসপোর্টের সমস্যা—যা কিছু হোক আমরা পাশে আছি। প্রয়োজনে সরকারের কাছেও আবেদন করব। আমাদের স্বপ্ন, ববিতা দেশের হয়ে পদক জিতে ফিরুক।”
আরও পড়ুন- মাছের ফাঁদে আটকে গেল ৬ ফুট লম্বা কেউটে! তারপর যা হল, দেখলে বিশ্বাস হবে না
আজ কুশুডাঙ্গা গ্রাম গর্বিত তাদেরই মেয়েকে নিয়ে। ববিতার চোখে এখন একটাই স্বপ্ন—২০২৬ সালের এশিয়ান গেমসে দেশের হয়ে সোনা জেতা।