আমফানে বিধ্বস্ত বাংলার ছবি ভাবায় ইন্দ্রজিৎ, কৌশিকদের। তাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে ওরা ছুটে যেতে চান সুন্দরবন, পাথরপ্রতিমা, গোসাবার সব হারানো মানুষগুলোর কাছে। অসহায় পরিবারগুলোর হাতে পৌঁছে দিতে চান চাল, পানীয় জল, ওষুধ, দুধ, ত্রিপলের মত জরুরী ত্রাণ সামগ্রী।
বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল দূরত্ব আর দুর্গম পথ। সুপার সাইক্লোনের তান্ডবে এখনও যে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে সুন্দরবনের অনেক গ্রাম, অনেক দ্বীপ। ফলে সাধ থাকলেও সাধ্যে কুলোচ্ছিল না। মুশকিল আসান হয়ে দাঁড়াচ্ছে অসপ্রে ওয়াটারওয়েজ। মাস কয়েক আগে নাম মাত্র খরচে কলকাতা থেকে সাগরের পথে ক্রুজ চালিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিল সংস্থাটি। মানবিকতা বড় দায়। কেন্দ্রীয় জলপথ পরিবহণের প্রাক্তন মুখ্য উপদেষ্টা অঞ্জন সিনহা এবার সেই ক্রুজের মাধ্যমেই সুন্দরবন, পাথরপ্রতিমার দুর্গম জায়গাগুলোতে সাহায্য পৌঁছে দিতে চান। অসপ্রে-র লক্ষ্য ১৫ টন ত্রাণ সামগ্রী। নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এনজিও-দের কাছে আবেদন জানিয়েছে অসপ্রে। আমফানের তাণ্ডবে দুর্গত মানুষগুলোর সাহায্যে এগিয়ে আসতে ইচ্ছুক এনজিওরা দুজন প্রতিনিধির মারফত নিজেদের ত্রাণ পৌঁছে দিতে পারবে সুন্দরবন, গোসাবার প্রত্যন্ত অঞ্চলে। সেটাও আবার জলপথে। মাত্র কয়েক ঘণ্টার যাত্রায়।
advertisement
ইচ্ছুক এনজিও দের যোগাযোগ করতে হবে info@ospreyindia.com-এ৷
অসপ্রের পক্ষ থেকে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। অল্প সময়ে বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছে জেলা প্রশাসন। আগামী শনিবার কলকাতার প্রিন্সেপ ঘাট থেকে ১৫ টন ত্রাণ নিয়ে সুন্দরবনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবে অসপ্রের মালয়েশিয়ান ক্রুজ 'নিউ ফ্রন্টিয়ের নাম্বার থ্রি'। রামগঙ্গা হয়ে সুন্দরবনের ১৮ টি পয়েন্টে ত্রাণ বিলি করা হবে। থাকবেন স্থানীয় প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিরা।
অসপ্রে ওয়াটারওয়েজের কর্ণধার অঞ্জন সিনহা বলেছিলেন,"ছোট নৌকায় যে পরিমাণ ত্রাণ পৌঁছচ্ছে, তাতে চাহিদা মেটানো সময়সাপেক্ষ। 'নিউ ফ্রন্টিয়র নাম্বার থ্রি' একসঙ্গে ১৫ টন ত্রাণ বহন করতে পারবে। ফলে অল্প সময়ে দুর্গম জলপথ পেরিয়ে তা পৌঁছে দেওয়া যাবে অনেক বেশি সংখ্যক মানুষের হাতে।"২০ মে আমফান তান্ডবের পর কেটে গিয়েছে বেশ কয়েকটা দিন। এখনও পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছয়নি অনেক জায়গাতেই। অসপ্রে ওয়াটারওয়েজের মালয়েশিয়ান ক্রুজ 'নর্থ ফ্রন্টিয়ার থ্রি'-র যাত্রা সফল হলে হাসি ফুটবে আমফানে তছনছ সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার অসহায় মানুষগুলোর মুখে। এর থেকে বড় প্রাপ্তি আর কীই বা হতে পারে!