নিহত যুবকের নাম কুমারেশ সাধু৷ তিনি অশোকনগর পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কচুয়া লেক পাড় এলাকায় (North 24 Parganas)। গত ২১ মার্চ প্রতিদিনের মতো ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ কাজে যাওয়ার জন্য বাইক নিয়ে বেরিয়ে ছিলেন কুমারেশ। গোলবাজার এলাকায় পথ কুকুরের তারা খেয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাইক নিয়ে পড়ে গিয়ে মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে ওই যুবকের।
advertisement
আরও পড়ুন: নিট পরীক্ষার প্রস্তুতিতে দরকার ৫ লক্ষ, উস্তিতে ছাত্রকে অপহরণ করে ধৃত শিক্ষক!
পরিবারের লোকজন খবর পেলে দুর্ঘটনাস্থল থেকে ওই যুবককে উদ্ধার করে প্রথমে অশোকনগরে স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷ শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পরে বারাসাত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখান থেকে কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। ২১ তারিখ রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ ওই যুবকের ব্রেন ডেথ হয়েছে বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
চরম শোকের মধ্যেও সেই মুহূর্তে দুর্ঘটনাগ্রস্ত কুমারেশের বিভিন্ন অঙ্গ দান করার মহৎ সিদ্ধান্ত নেন তাঁর পরিবার। সেই মতো কুমারেশের লিভার, কিডনি, হার্ট এবং কর্নিয়া দান করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিয়ের ২ বছরের মধ্যে হয়নি সন্তান, এই 'অপরাধ'-এ গৃহবধূকে খুনের অভিযোগ শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর লিভার রাজস্থানের জয়পুরের এক ব্যক্তিকে দেওয়া হয়েছে৷ কিডনি দেওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের এক মহিলাকে এবং হার্ট দেওয়া হয়েছে চেন্নাইয়ের ২৪ বছরের এক যুবককে৷ কুমারেশের কর্নিয়াএকটি বেসরকারি চোখের হাসপাতালে সংরক্ষণ করা হয়েছে।
ছেলেকে হারানোর শোকের মধ্যেও কুমারেশের মা সন্ধ্যা সাধু ২৪ বছর বয়সি আরও একটি ছেলের মধ্যেই তাঁর সন্তান বেঁচে থাকবেন। তিনি আরও বলেন, 'ছেলে মারা গিয়েছে৷ দেহের সৎকার তো করতেই হত৷ চিতার আগুনে সব পুড়ে ছাই হয়ে যেত। তার থেকে ছেলের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের মাধ্যমে চারটি প্রাণ বাঁচলে তাঁদের মধ্যেই আমাদের ছেলে বেঁচে থাকবে।' তাঁদের দেখাদেখি অন্যরাও যাতে অঙ্গদানের পথে এগিয়ে আসেন, সেই অনুরোধই করছে সাধু পরিবার৷
এই মুহূর্তে সাধু পরিবারের মানুষিক অবস্থা ভালো নেই তবুও আমাদের ক্যামেরার সামনে দিন কাঁপা কাঁপা গলায় সমাজের সাধারণ মানুষের কাছে তাদের একটাই অনুরোধ এই ধরনের কাজে আগামীদিনে সমাজের সব শ্রেণীর মানুষ এগিয়ে আসলে একাধিক জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে।
Jiaul Alam