আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারককে অনুব্রত বৃহস্পতিবার জানান, তাঁর শরীর ভাল নেই, বিভিন্ন রকম শারীরিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি, ভোলেব্যোম চালকলের অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার আবেদনও করেছেন তিনি। বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী অনুব্রত মণ্ডলের আবেদন শোনেন। তাঁর শারীরিক অসুবিধার বিষয়টি জেল কর্তৃপক্ষ যাতে নজরে রাখেন, সে জন্য জেল সুপারকে চিঠি পাঠাবেন বলে জানিয়েছেন বিচারক। একই সঙ্গে অ্যাকাউন্ট খোলার বিষয়টি নিয়ে আবেদন জানানোর জন্যও অনুব্রতকে জানিয়েছেন।
advertisement
এদিনের ভার্চুয়াল শুনানিতে গরু পাচারকাণ্ডে অভিযুক্ত অনুব্রত এবং তাঁর প্রাক্তন নিরাপত্তারক্ষী সহগল হোসেন, দু’জন্যেই তিহাড় জেল থেকে উপস্থিত ছিলেন। অনুব্রতকে দেখে বিচারক তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘আপনাকে খুব ক্লান্ত লাগছে। অনুব্রতবাবু, কেমন আছেন?’’ অনুব্রত জবাব দেন, ‘‘শরীর ভাল নেই। সব রকম অসুবিধা হচ্ছে।’’ বিচারক বলেন, ‘‘ডাক্তার দেখছে তো ?’’ অনুব্রত উত্তর দেন, ‘‘ডাক্তার দেখাচ্ছি। জেলের মেডিক্যাল ওয়ার্ডে পড়ে আছি।’’ বিচারক বলেন, ‘‘বুঝতে পারছি।’’
আরও পড়ুন: ভাতের চেয়েও ভাল ‘পান্তাভাত’…? গবেষণায় চমকে দেওয়া ফল! গরমকে তুড়ি মেরে ঠান্ডা করুন পান্তায়
এর পর বিচারক সহগলকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘তোমার গয়না রিপোর্ট অর্ধেক এসেছে।’’ সরকারি আইনজীবীর উদ্দেশে তিনি এরপর বলেন, ‘‘গয়নার রিপোর্টটা কী হল?’’ সরকারি আইনজীবী উত্তর দেন, ‘‘তদন্তকারী আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলে জানাচ্ছি।’’ এর পর বিচারক সহগলকে বলেন, ‘‘আমি বিষয়টি দেখছি। অনেক দিন ধরেই বিষয়টা ঝুলে আছে। এ বার দ্রুত ব্যবস্থা হবে।’’ তদন্তকারী আধিকারিকের সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর সরকারি আইনজীবী বলেন, ‘‘স্যর ওঁর সঙ্গে কথা হয়েছে। পরবর্তী শুনানির দিনই সম্পূর্ণ রিপোর্ট জমা করা হবে।’’
এরপরেই ফের অনুব্রত মুখ খোলেন। বলেন, ‘‘স্যর চালকলের অ্যাকাউন্টটা ডিফ্রিজ (খুলে) দিন।’’ বিচারক তখন জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘কোন চালকল?’’ অনুব্রত জবাব দেন, ‘‘ভোলেব্যোম চালকল। ওই দু’টি অ্যাকাউন্ট যেন খুলে দেওয়া হয়। শ্রমিকেরা বেতন পাচ্ছেন না। ২০০ শ্রমিক আছে। বহু জিনিসপত্র নষ্ট হচ্ছে।’’
বিচারক জানান, ‘‘মুখের কথায় আমি কোনও অ্যাকাউন্ট তো খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারি না। আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করুন। আপনার এবং সিবিআই দু’পক্ষের কথা শুনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ যদিও বৃহস্পতিবার অনুব্রত বা সহগল, কারও আইনজীবীই ছিলেন না আদালতে।বিচারক এরপরেই এই মামলার পরবর্তী শুনানির নির্দেশ দেন আগামী ৭ জুন। পাশাপাশি, অনুব্রতের সবরকম চিকিৎসার নির্দেশও তিনি দিয়েছেন তিহাড় জেল সুপারকে।