অনুব্রত মণ্ডলের অনুপস্থিতি কোনও প্রভাবই ফেলতে পারল না পঞ্চায়েত নির্বাচনে। বীরভূমে জেলা পরিষদে একচ্ছত্র জয় পেল তৃণমূল। মোট ৫২টি আসনের জেলা পরিষদে ৫১টিতেই জয় পেয়েছে তৃণমূল। ফলে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়েই জেলা পরিষদ গঠন করবে ঘাসফুল শিবির।
আরও পড়ুন: গণনাকেন্দ্রের মধ্যেই মৃত্যু হাতে নিয়ে রাতভর আরাবুল, ভোরে উদ্ধার! ভাঙড় যেন যুদ্ধক্ষেত্র
advertisement
পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফলের যে গতি, তাতে এবারেও পাহাড় প্রমাণ আসন নিয়ে ত্রিস্তরীও পঞ্চায়েতে জয় পেতে চলেছে ঘাসফুল শিবির। তবে বেশ কয়েকটি নজরে থাকা জেলার মধ্যে এই নির্বাচনে নজরে ছিল বীরভূম। তৃণমূলের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডলের গড়ে এবার নির্বাচন হচ্ছে তাকে ছাড়াই। জেলবন্দী অনুব্রত মণ্ডলের শক্ত হাতে ধরা ছিল ঘাসফুল শিবিরের সংগঠন।
আরও পড়ুন: ‘আবারও প্রমাণ হল…’, রাত বাড়তেই মুখ খুললেন মমতা! পঞ্চায়েতে সবুজ ঝড়
তার অনুপস্থিতিতে ঘাসফুল শিবির কেমন ফল করে সেদিকে নজর ছিল রাজনৈতিক মহলের। অনুব্রতহীন বীরভূমে তৃণমূলের জয় যেন সেই সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে গেল নিমেষেই।
শনিবার ভোটের দিন রক্তপাত দেখা যায়নি বীরভূমে। তবে বিরোধী নির্বাচনী এজেন্টদের বসতে না-দেওয়া থেকে বুথ দখল, ছাপ্পা, ভোট লুট এবং সন্ত্রাসের অভিযোগ ছিল। বুথে আতঙ্কের মধ্যে থাকা মহিলা ভোটকর্মীকে হাউহাউ করে কাঁদতেও দেখা গিয়েছে। বিজেপি বলছে, সবই হয়েছে অনুব্রত জমানার মতো। জেলা বিজেপির সভাপতি ধ্রুব সাহার কথায়, ‘‘জেলার সব জায়গায় গোলমাল হয়েছে। নিঃশব্দে বিরোধীদের আটকে দিয়ে প্রহসন হয়েছে। অনুব্রত মণ্ডল না-থাকলেও তাঁর বালি, কয়লা, গরু মাফিয়ার দল তো ছিল। তারাই কাজ করেছে।’’
অনুব্রতর বদলে এ বার বিজেপির আঙুল ছিল জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য কাজল শেখের দিকে। তিনি এ বার জেলা পরিষদের প্রার্থীও ছিলেন। জিতেছেন রেকর্ড ভোটে। অনুব্রতের শেখানো ‘খেলা হবে’ স্লোগান পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে শোনা গিয়েছে কাজলের গলায়। ভোটের কয়েক দিন আগে নানুরে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘‘যাঁরা রাতের অন্ধকারে প্রচারের নামে আদিবাসী, অনুন্নত সম্প্রদায়ের মানুষজনকে টাকা দিয়ে, মদ খাইয়ে ভুল বোঝাতে আসবেন, তাঁদের দেখে নেওয়া হবে! তখন খেলাও হবে!’’ তবে অনুব্রতের কায়দায় ‘চড়াম চড়াম’ বা ‘গুড় বাতাসা’-র মতো ‘খেলা হবে’-র ‘ব্যাখ্যা’ দেননি কাজল। ফল প্রকাশের পর দেখা গেল, অনুব্রত থাকুক না থাকুক, বীরভূম কেবল তৃণমূলেরই।