বহরমপুর শহরের মানুষও দিন রাত প্রার্থনা করছিলেন তাদের একান্ত আপনার ঐন্দ্রিলাকে যেন রক্ষা করেন সৃষ্টি কর্তা। শেষ রক্ষা আর হল না। বহরমপুরের ইন্দ্রপ্রস্থ এলাকার বাসিন্দা ঐন্দ্রিলা ও তার দিদি বহরমপুরের কাশেশ্বরী গার্লস হাই স্কুলের ছাত্রী। ২০১৫ সালের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী থাকাকালীন মারণ রোগে আক্রান্ত হয় ঐন্দ্রিলা। একাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা চলাকালীন খুব অসুস্থ হয়ে পড়লেও কিন্তু হাল ছাড়েননি ঐন্দ্রিলা, অসুস্থ অবস্থায় দুটো পরীক্ষা স্কুলের মধ্যেই দিয়েছিলেন, এরপর তাঁকে ভর্তি করা হয় এক বেসরকারি হাসপাতালে। সেইসময় ঐন্দ্রিলা স্কুলের শিক্ষিকাদের জানান তিনি পরীক্ষা দেবেন। ওই অবস্থাতেই হাসপাতালের বেডে শুয়েই পরীক্ষা দিয়েছিলেন ঐন্দ্রিলা বলে জানান প্রধান শিক্ষিকা চৈতালী চট্টপাধ্যায়।
advertisement
আরও পড়ুন : 'ওপারে ভাল থাকিস'... চোখের জল, লিপস্টিক আর চন্দনে ছোটবোনকে শেষবারের মতো সাজালেন দিদি
নাচ গান পড়াশোনা সব গুণই ছিল মিষ্টি মেয়েটির। কোনও কিছুতেই হারতে চাইত না। পাড়ার অনুষ্ঠানে কোনও প্রতিযোগিতাতে প্রথম না হলে কান্না জুড়ে দিত। বেশির ভাগ অনুষ্ঠানেই ও প্রথম হত। ঐন্দ্রিলাদের বাড়িতেই ভাড়া রয়েছেন সুস্মিতা দে। তিনি বলেন, প্রতিদিনই বাবা মায়ের সঙ্গে কথা হচ্ছিল, ভেবেছিলাম হয়ত সুস্থ হয়ে ফিরে আসবে। কলকাতা থেকে বাড়ি ফিরলেই হইহুল্লোড় করে মেতে থাকত। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হল না।
অন্য প্রতিবেশি জাহ্নবী চট্টোপাধ্যায় বলেন, জুলাই মাসে শেষ এসেছিল। তারপরই আসার কথা ছিল পুজোতে কিন্তু আসতে পারেনি। তার পরেই অসুস্থ হয়ে গেল। রবিবার দুপুর পর্যন্ত ওঁরা অপেক্ষায় ছিলেন হয়ত মেয়েটাকে শেষ দেখতে পাবেন কিন্তু কলকাতাতেই শেষকৃত্য হওয়ায় দেখা আর হল না। টিভিতে চোখ রেখেই ওকে শেষ দেখা দেখলাম। ঈশ্বর ওকে ভালো রাখুক।