বৈঠক সূত্রে খবর, জেলায় অভিষেক এই কর্মসূচির জন্য ১০ জুন বনগাঁ লোকসভার অধীন চাঁদপাড়ায় পৌঁছে সেখানেই রাত্রিবাস করবেন। ১১ জুন সকালে ঠাকুরবাড়িতে গিয়ে প্রণাম সেরে শুরু করবেন জেলার কর্মসূচি। এখনও পর্যন্ত স্থির রয়েছে, উত্তর ২৪ পরগণা জেলায় অভিষেক মোট ২ টি সভা করবেন। একটি বনগাঁ লোকসভা ও অন্যটি বসিরহাট। প্রথম সভাটি হবে বনগাঁ লোকসভার অধীন চাঁদপাড়ায়। অন্যটি বসিরহাটে।
advertisement
আরও পড়ুন: মৃতদেহটাও তো মেলেনি! ১৩ বছর ধরে বাবার বুকপকেটে মেয়ের ছবি, কোথাও যদি একবার দেখা মিলে যায়..
রাজনৈতিক মহলের মতে, জেলায় অভিষেকের সভার জন্য যে বনগাঁ লোকসভার অধীন চাঁদপাড়াকে নির্বাচন করা হয়েছে তার সঙ্গে ঠাকরবাড়ি ও মতুয়া ভোটের সরসরি সম্পর্ক রয়ছে। ২০২১ এর বিধানসভার ফলে বনগাঁ উত্তর ও দক্ষিণ ২ টি আসনই বিজেপির দখলে।
২০১১ এ রাজ্যে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার সময় থেকেই ঠাকুরবাড়িকে কেন্দ্র করে মতুয়া ভোট বামেদের থেকে তৃণমূলের দিকে চলে আসে। ঠাকুরবাড়িকে গুরুত্ব দিয়ে মমতাবালা ঠাকুরকে সাংসদও করেন মমতা।
কিন্তু, ২০১৪ ও ২০১৯ এর লোকসভা ভোটে মতুয়া ভোটব্যাঙ্কে ফাটল ধরাতে ঝাঁপায় বিজেপি। মতুয়াদের নাগরিকত্ব প্রদানের প্রতিশ্রুতি ২০১৯ এর লোকসভা ও ২০২১ এর বিধানসভা ভোটে বিজেপিকে সুবিধা করে দেয়। ঠাকুরবাড়ির মতুয়া মহাসংঘের নেতা শান্তনু ঠাকুরকে প্রার্থী করে বনগাঁ লোকসভা আসন তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। যদিও, ২০২১এ বিধানসভা ভোটে জেলার ৩৩ টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ২৮ টি আসন দখল করে তৃণমূল। বাকি পাঁচটি বিজেপি। এর মধ্যে বিজেপির টিকিটে জেতা বাগদার বিধায়ক দলবদল করে বর্তমানে তৃণমূলে। তিনি আবার বর্তমানে বনগাঁয় দলীয় সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা।
আরও পড়ুন: করমণ্ডল ট্রেন দুর্ঘটনায় ক্ষতবিক্ষত দেহ! একটি মৃতদেহ নিয়ে টানাপড়েন দুই পরিবারের, ১০০ দেহ শনাক্ত করা যায়নি এখনও
এদিকে , ২০১৯ এর প্রতিশ্রুতি এখনও পূরণ করতে পারেনি বিজেপি। সিএএ বা নাগরিকত্ব প্রদানের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে না পারায়, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ওপর ক্ষুব্ধ বনগাঁর সাংসদ শান্তনু। তাঁকে সামলে রাখতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করে এবং মাঝে মধ্যে বনগাঁর ঠাকুরবাড়িতে এসে মতুয়া ক্ষোভে প্রলেপ দিতে হয়েছে খোদ প্রধানমন্ত্রীকেও। কিন্তু, বিজেপির একাংশের মতে, তাতে বৃহত্তর মতুয়া সমাজ সন্তুষ্ট হতে পারেনি। বিজেপির মতুয়া বিধায়ক কবিয়াল অসীম সরকার তো বলেই দিয়েছেন, ২৪ এর লোকসভা ভোটের আগে সিএএ কার্যকর করা না গেলে, জেলায় মতুয়া সমাজের কাছে বিজেপির হয়ে তিনি ভোট চাইতে যেতে পারবেন না।
সব মিলিয়ে জেলার মতুয়া ভোট ব্যাঙ্ক ধরে রাখা নিয়ে যখন বিজেপি চিন্তিত। তখন, জেলায় নবজোয়ার কর্মসূচি শুরুর স্থান হিসাবে বনগাঁর ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়িকে বেছে নেওয়া যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। আর, বসিরহাট তো জন বিন্যাসের কারনে তৃণমূলের কাছে ওই জেলায় সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য আসন বলেই বিবেচিত। উত্তর ২৪ পরগণার পরেই ১৪ থেকে ১৬ জুন দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলায় নবজোয়ার কর্মসূচি শেষ হবে। অন্তিম পর্যায়ে ১৬ জুন কাকদ্বীপের সমাপ্তি সভায় উপস্থিত থাকার কথা মুখ্যমন্ত্রীর।