গোটা দেশ করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে জেরবার। রোজই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সংক্রমণের হার। এমনকী মৃত্যুর হারও ভয় ধরানোর মতো। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো রয়েছে দেশজুড়ে অক্সিজেন সিলিন্ডারের ঘাটতি। শুধুমাত্র কৃত্রিম অক্সিজেনের অভাবেই গয় কয়েকদিনে মারা গিয়েছেন বহু মানুষ। দেশের করোনা পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হওয়ার জন্য কেন্দ্রকেই এদিন দায়ী করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, ''সাত মাস সময় পেয়েছিল কেন্দ্র। সঠিক পদ্ধতিতে করোনা মোকাবিলা করলে দেশের আজ এই পরিস্থিতি হত না। দেশের মানুষকে আগে ভ্যাকসিন না দিয়ে বিদেশে রফতানি করা হল। সব থেকে বড় কথা, ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থার থেকে কেন্দ্র দেড়শো টাকায় ভ্যাকসিন পাবে। আর রাজ্যগুলিকে একই ভ্যাকসিন কিনতে হবে চারশো টাকায়। কেন বাংলার মানুষের কি জীবনের কোনও দাম নেই! লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন নিয়ে খেলা করল কেন্দ্র। ২০২০ এপ্রিল থেকে ২০২১ জানুয়ারি পর্যন্ত নয় হাজার মেট্রিক টন অক্সিজেন বিদেশে রফতানি করেছে কেন্দ্র। তাই এখন সারা দেশে অক্সিজেনের ঘাটতি। কেন্দ্রের সরকার জানত, দ্বিতীয়বার করোনা এদেশে ছড়ালে সামলাতে হিমশিম খেতে হবে। সব জেনেও অক্সিজেন, ভ্যাকসিন দেশে পাঠানো হল।''
advertisement
তিনি এদিন আরও বলেন, ''২০২০ সালে যখন করোনা চলছে তখন সাংসদ ভবন হল। ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ করে। তিন হাজার কোটি খরচ করে মূর্তি। সাড়ে আট হাজার কোটি টাকায় প্রধানমন্ত্রীর বিমান এল। এই টাকাগুলো নষ্ট। এগুলো তো মানুষেরই টাকা। কতগুলো অক্সিজেন প্ল্যান্ট হত! এই টাকাগুলো মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে কাজে লাগত। মানুষের জীবন তো আগে হওয়া উচিত। আমি তো সাংসদ। আমার তো পুরনো সাংসদ ভবনে বসতে অসুবিধা হচ্ছিল না। মূর্তি গড়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ নাকি মানুষকে টিকা দেওয়া আগে! রাজনৈতিক সভা করে, দিল্লি-কলকাতা করে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আজ বাংলার পরিস্থিতি এতটা খারাপ করে তুলল। এর আগে বিহারে নির্বাচন করে ওখানে পরিস্থিতি খারাপ করেছিল। তার পর বাংলায় করোনা পরিস্থিতি এতটা খারাপ হল। আমরা বারবার বলেছিলাম, শেষ চার দফার নির্বাচন একবার করা হোক। কমিশন আমাদের কোনও কথা শুনল না। শুধুমাত্র একটা রাজনৈনিক দলকে ফায়দা করে দেবে বলে! আমরা বলছিলাম, দরকার হলে কেন্দ্রীয় বাহিনী বাড়ানো হোক। কিন্তু কমিশন আমাদের সব আর্জি, আবেদন খারিজ করল। মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলল।''