বর্তমানে বিপদ মুক্ত ওই মহিলা। জানা গিয়েছে, মহিলার নাম সায়েদা রেশমা বেগম। বাড়ি সিউড়ি। বয়স, ৪৫ বছর বয়সি সায়েদা রেশমা বেগম গত ৩ বছর ধরে পেটের যন্ত্রণায় ভুগছিলেন। বিভিন্ন হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর পর অবশেষে সিউড়ির এক বেসরকারি নার্সিংহোমে ধরা পরে টিউমার। বুধবার ওই নার্সিংহোমের চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানেই প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করে সায়েদা রেশমা বেগমের পেট থেকে ৫ কেজি ৩৫০ গ্রাম ওজনের টিউমারটি বের করা হয়।
advertisement
চিকিৎসক দেবাশিস দেবাংশী জানান, সিউড়ির বেসরকারি নার্সিংহোমে এই জটিল অপারেশন সহজসাধ্য ছিল না। রোগীর শারীরিক অবস্থাও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। দেবাশিস দেবাংশী বলেন, "গত ৬ অক্টোবর সায়েদা রেশমা বেগম পেটে যন্ত্রণা নিয়ে আমার কাছে আসেন। আগে অনেক ডাক্তার দেখিয়েছেন, পরীক্ষাও করিয়েছেন। সেই সব কাগজপত্র দেখে আমার সন্দেহ হয়। সঙ্গে সঙ্গে নার্সিংহোমেই তাঁর পেটের আল্ট্রা সোনোগ্রাফি করি। সেটায় দেখলাম, পেটের ভিতরে টিউমার রয়েছে। সামান্য হলেও জল জমেছে পেটে। তাই ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছিল না।''
সায়েদা রেশমা বেগমের স্বামী প্রতিরক্ষা দফতরের কর্মী। তাই কম্যান্ড হাসপাতালে তিনি এমআরআই করান। সেই এমআরআই রিপোর্টে দেখা যায়, সায়েদা রেশমা বেগমের জরায়ুতে টিউমার রয়েছে। যদিও দেবাশিস দেবাংশীর অনুমান ছিল, মহিলার পেটে বৃহদাকারের ওভারির টিউমার রয়েছে। কিন্তু কম্যান্ড হাসপাতালের এমআরআই রিপোর্টে জরায়ুর টিউমার বলায়, সেরকম মানসিক প্রস্তুতি নিয়েই অস্ত্রোপচার শুরু হয়।
আরও পড়ুন: বাইকে করে অফিস যাচ্ছিলেন, ডাম্পারের চাকায় পিষে গেল...
তিনি বলেন, "দু'বার সিজারের মাধ্যমে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন মহিলা। লাইগেশন হয়েছে। পেটে মোট ৩টে অপারেশন হয়ে গিয়েছে। উপরন্তু তিনি হাই সুগার, হাই প্রেসারের রোগী। ফলে আবার পেটে অপারেশন করতে গিয়ে অনেক জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ওভারির টিউমার ভেবেই তাঁর পুরো পেটের নীচে থেকে উপর পর্যন্ত কাটতে হয়। ওভারির টিউমার ছোট ছোট পিস করে বের করা যায় না। তারপর পুরো পেট কাটতে বেরিয়ে আসে বিশাল টিউমার। ওই টিউমারের ওজন ৫ কেজি ৩৫০ গ্রাম। যা দু'টি বাচ্চার ওজনের সমান। অপারেশনটি সহজ ছিল না। বুধবার সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত টানা ৩ ঘণ্টার অপারেশন হয়েছে।"
আরও পড়ুন: ভুলেও অনলাইনে পুজো দেবেন না তারাপীঠে! পুরোটাই ফেক! সতর্ক করছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ!
সায়েদা রেশমা বেগমের স্বামী সৈয়দ গোলাম রিজওয়ান বলেন, "আমার স্ত্রী সায়েদা রেশমা বেগম ৩ বছর ধরে পেটের যন্ত্রণায় ভুগছে। একমাস ধরে ঘুরছি কম্যান্ড হাসপাতালে। অবশেষে সিউড়ির বেসরকারি এই নার্সিংহোমে অপারেশন হল এবং এখন আমার স্ত্রী সুস্থ রয়েছে। জীবনে প্রথম এত বড় টিউমার দেখলাম।"