TRENDING:

Howrah News: পেশায় পুলকার চালক, লেখালিখি তাঁর নেশা! ৪টি বই প্রকাশিত ৩ বছরে

Last Updated:

পুল্কার চালকের লেখা চারটি বই প্রকাশিত হয়েছে শেষ তিন বছরে, সুযোগ পেলেই কবিতা লিখতে ভালোবাসেন হাওড়ার তুতুন বাবু

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
হাওড়া: পেশায় পুলকার চালক হলেও লেখালিখি তার নেশা! সকাল থেকে একটানা কয়েক ঘণ্টা স্টিয়ারিংয়ে থাকে হাত। কাজের মধ্যে অবসর পেলেই সেই হাতে ওঠে কলম। এভাবেই একজন পুলকার চালক হয়েও তাঁর কলমে লেখা বহু কবিতা ছাপা হয়েছে বইয়ের পাতায়।‌
advertisement

ইতিমধ্যেই বেশ কিছু বই প্রকাশিত হয়েছে। পেশায় পুলকার চালক হলেও লেখক হিসাবেও অল্প দিনে সুপরিচিত হাওড়ার তোতন রায়। গাড়ির যাত্রী তাঁর কাছে লক্ষ্মী, তাঁদের উপর ভর করেই চলে সংসার।

সেই যাত্রী অবসরের সময় পেলেই ছোট্ট কাগজে কবিতা লেখেন। তাঁর গাড়িতে যা কিছু কাগজ সবেতেই লেখা কবিতা। তেলের রসিদ কিংবা চাঁদার বিল, সবকিছুইতেই লেখা থাকে তাঁর কবিতা। এভাবেই ঘরে বাইরে সব মিলিয়ে প্রায় দুই হাজার কবিতা ও গান লিখে ফেলেছেন তোতন বাবু।

advertisement

লিখতে যেমন ভালোবাসেন তেমনি আবার বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে থাকা কর্তব্য বলেই মনে করেন। তাই করোনা আবহাওয়া যখন মানুষ গৃহবন্দী, তখন নিজের জীবনের তোয়াক্কা না করে, কখনও অসুস্থ মানুষকে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন, কখনও অভুক্ত মানুষকে খাবার দিয়েছেন।

View More

একই সঙ্গে শ্মশান যাত্রী হিসেবে নিজেকে সামিল রেখে শ্মশান ঘাটে ডোমের দায়িত্ব সামলেছেন। তাই সকলের কাছে প্রিয় মানুষ তিনি। কথায় রয়েছে যে, যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। সেই কথার যেন বাস্তব চিত্র হাওড়ায়।

advertisement

সাধারণ নিম্নবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ। শৈশব থেকেই লেখাপড়ার প্রতি বেশ মনোযোগী। তবে অর্থ অভাবে লেখাপড়া বেশিদূর এগোয়নি। কোন রকমে স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজ যাওয়া হয়নি। তবে লেখা আরও সমৃদ্ধ করতে মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন তোতন বাবু।

শৈশব তখন প্রাথমিক স্কুলের ছাত্র সেই সময় থেকে ভ্যানচালক বাবার সঙ্গ দিতেন তোতন বাবু। পরিস্থিতির চাপে একসময় শিক্ষা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে হয়। সে সময় থেকেই থমকে যায় কলম।

advertisement

তারপর চড়াই-উৎরাই, সংসার বিবাহিত জীবন। দীর্ঘ কয়েক বছর পর আবার লেখা শুরু। ২০২২ সাল থেকে আবার নতুন করে লিখতে শুরু করেছেন। ইতিমধ্যেই কয়েকশো কবিতা-সহ চারটে বই প্রকাশ পেয়েছে। তার লেখার শ্রেষ্ঠ বই ‘ শ্রদ্ধাঞ্জলি’ ।

তোতন রায় পেশায় একজন পুলকার চালক। সাঁকরাইলের বাড়ি থেকে রোজ সকালে গাড়ি নিয়ে বেরোন তিনি।প্রতিনিয়ত যা চোখে দেখছেন তাই নিয়ে লিখছেন। তাঁর লেখায় স্থান পেয়েছে, গ্রামের ডাক্তার, সমাজসেবী, ধর্মগুরু-সহ সাধারণ যাত্রীরা। কখনও বাঁশবন কখনও আবার বাড়ির উঠোন ও উঠোনে থাকা কাঁঠাল গাছ নিয়েই কবিতা লিখেছেন।

advertisement

কঠিন লড়াইয়ের মধ্যেও কবিতা বা লেখালেখি ছাড়েননি। এ প্রসঙ্গে তোতন বাবু জানান, ‘‘লিখতে ভাল লাগে তাই লিখি। চোখের সামনে যা দেখি তাই লিখি। অনেকেই এই নিয়ে তিরস্কার করেছে। তবে কোনও কিছুতেই আমি থেমে যায়নি। আরও অনেক লিখে সুনাম পাবো এটাই ভাল লাগা, তাই লিখছি।’’

৫১ বছর বয়সী তোতোন বাবু জানান, ‘‘আরও নিখুঁত লিখতে চাই। তাই আবার লেখাপড়া শুরু করতে চাই। প্রতিমুহূর্তে সময় পেলেই লিখছি।’’

লেখা সম্পূর্ণ হলে সবার আগে স্ত্রী কে দেখান তিনি। তারপর আবার কাটা ছাড়া করে লেখা পূর্ণতা দেওয়া। এ প্রসঙ্গে স্ত্রী মৈত্রী দেবী জানান, নিজের যতটুকু জ্ঞান রয়েছে তা দিয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করি। আরো অনেক বেশি সুনাম হোক সেই কামনা করি।

প্রথম লেখা প্রথম বই ‘স্বপ্ননীল’। ১০০টি কবিতার সংকলন এটি। তারপর ‘বহুব্রীহি’, ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি’ নামে আরও দুটি বই প্রকাশ করেন। ইতিমধ্যেই কবি হিসাবে সারা বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু পুরস্কার ও সম্মানিত হয়েছেন।

আগামী কলকাতা বইমেলায় তাঁর লেখা বই প্রকাশিত হবে। তাই নিজের কাজের পাশাপাশি লেখায় চরম ব্যস্ত হাওড়ার তোতন রায়।

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
গলদা চিংড়ি ছাড়া সম্পূর্ণ নয় 'এই' কালীপুজো! বসিরহাটের ইটিন্ডায় অটুট ৪০০ বছরের রীতি
আরও দেখুন

রাকেশ মাইতি

বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
Howrah News: পেশায় পুলকার চালক, লেখালিখি তাঁর নেশা! ৪টি বই প্রকাশিত ৩ বছরে
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল