রবিবার পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার আমারুন বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি শিয়ালকে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন ভাতারের বাসিন্দা অরূপ কুমার। রাস্তার ধার থেকে শিয়ালটিকে তুলে নিয়ে একটি ছাউনির তলায় নিয়ে যান তিনি। তার আঘাতের জায়গা জল দিয়ে ধুয়ে দেওয়া হয়। কিছু অংশ আঘাতে কেটে গিয়েছিল। সেখানে সেলাই করেন স্হানীয় চিকিৎসকরা। পশু প্রেমিক হোম রানা ও ধীমান ভট্টাচার্যকে খবর দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ওই দুই পশুপ্রেমী খুব কম সময়ের মধ্যে সেখানে পৌঁছে অসুস্থ শিয়ালটির শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করেন। অসুস্থ শিয়ালটিকে উদ্ধার করে ভাতার বাজারে নিয়ে যাওয়া হয়।
advertisement
সেখানেই পশু রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা করেন। কাপড় দিয়ে শিয়ালটিকে ঢেকে রাখা হয়। ধীমান বন দফতরে খবর দেন। প্রাথমিক চিকিৎসায় শিয়ালটি অনেকটা সুস্হ হয়ে উঠলে তাকে বন দপ্তরের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বন বিভাগের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, শিয়ালটিকে রমনাবাগান অভয়ারণ্যে রেখে চিকিৎসা করা হবে।
এমনিতে এখন শিয়ালের দেখা খুব কম মেলে। রাতের অন্ধকারে হুক্কা হুয়া ডাক আর শোনাই যায় না। দিন দিন বাড়ছে জনবসতি। জঙ্গল কেটে সাফ করে ফেলা হচ্ছে। ততই অবলুপ্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে শিয়াল-সহ নানা প্রাণী। পশুপ্রেমীরা বলছেন, গ্রামীণ এলাকায় নদীর ধারে এখনও শিয়াল রয়েছে। তবে তারা এখন বিপন্ন। তাদের সংখ্যা দিন দিন কমছে। তাদের খাবারেও টান পড়ছে।
অন্য দিকে জমিতে ব্যাপক ভাবে কীটনাশক, রাসায়নিক সার প্রয়োগ করা হচ্ছে। তাতে মৃত্যু হচ্ছে শামুক কাঁকড়া সহ বিভিন্ন ছোট মাছের। সেই সব জমির বিষ জলে মৃত্যু হচ্ছে শিয়ালেরও। কয়েক দিন আগে চুপি চড়ের কাছে এমনই বিষ জলের কারণে কয়েকশো পরিযায়ী পাখির মৃত্যুতে রাজ্য জুড়ে আলোড়ন তৈরি হয়েছিল।
ভাতারের এই শিয়ালটি রাতে খাবারের খোঁজে বেরিয়ে রাস্তা পার হওয়ার সময় কোনও গাড়ির ধাক্কায় আহত হয় বলেই মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আহত অবস্থায় সে সারা রাত রাস্তার ধারে পড়ে ছিল। সকালে বাসিন্দাদের নজরে আসে। তবে স্হানীয়রা শিয়ালটিকে সুস্থ করে তুলতে উদ্যোগী হওয়ায় খুশি ভাতারের বাসিন্দা। তাঁরা বলেন, রাতে ফাঁকা রাস্তায় খুব দ্রুত গতিতে গাড়ি ছোটে। সেই গাড়ির ধাক্কায় প্রতি রাতেই প্রচুর কুকুর, শিয়াল, সাপের মৃত্যু হয়। তাই এ ব্যাপারে গাড়ি চালকদের সতর্ক থাকা প্রয়োজন বলে মনে করছেন পশুপ্রেমীরা।