কথিত আছে, ট্রেনের চালক ট্রেন থামিয়ে প্রণাম করে ট্রেন চালান। নবাব সরফরাজ খানের আমলে কাজের সন্ধানে মহারাষ্ট্র থেকে বাংলায় আসেন এক ব্রাহ্মণ, তাঁর নাম ছিল কৃষ্ণচন্দ্র শর্মা। পরে তিনি হোতা উপাধি পান। পরবর্তীতে কাশিমবাজার নবাবের অধীনে কাজ পেয়ে যান কৃষ্ণচন্দ্র হোতা। এই ব্যক্তি ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত নিঃসন্তান ছিলেন। তিনি নিজের দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য চিন্তাভাবনা করলে স্বপ্নাদেশ পান, ‘তোর কাছে আসছি, তুই এখানে থাক’। এক বছর পর কন্যাসন্তানের মুখ দেখেন কৃষ্ণচন্দ্রবাবু। মেয়ের নাম দেওয়া হয় করুণাময়ী। সেই করুণাময়ী ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। বাবা তাঁকে আগলে রাখতেন।
advertisement
কথিত আছে, এই বিষ্ণুপুর ছিল জঙ্গল ও মহাশ্মশান। দৈনিক অফিস থেকে ফেরার পথে বিষ্ণুপুরে বট বৃক্ষের তলায় ধ্যান করতেন কৃষ্ণচন্দ্র হোতা এবং সামনে খেলা করতেন তাঁর কন্যা। একদিন মনে পড়ে অফিসে কোনও জরুরি কাজ ফেলে এসেছেন। কাশিমবাজার আবার যেতে হবে। যদিও মেয়ে ক্লান্ত থাকায় যেতে চায়নি। সেই সময় পিতা দেখেন, রাস্তা দিয়ে পরিচিত শাঁখারি যাচ্ছেন। তাঁকে বলেন, সন্তানকে একটু বাড়ি পৌঁছে দিতে।
শাঁখারির সঙ্গে নৌকা করে যাওয়ার সময় হাত ছেড়ে জলের উপর বসে পড়ে করুণাময়ী। অনেক ডাকাডাকি করেও করুণাময়ী আর আসে না এবং সে জেদ করে, তাঁর হাতে যেন শাঁখা পড়িয়ে দেওয়া হয়। সেই মতো শাঁখা পড়িয়ে দেন শাঁখারি। এই কথা জানতে পারে তাঁর পিতা এবং মেয়ের শাঁখা পড়া দুই হাত দেখতে পান এবং সেই দু’টি হাত জলে আন্তরিত হয়ে যায়। কৃষ্ণচন্দ্রবাবু মেয়ের শোকে বিষ্ণুপুর মহাশ্মশানে ধ্যানস্থ অবস্থায় এক গাছের কুঠুরিতে মায়ের দর্শন পান এবং এরপর মাকে এখানে দেবী কালীরূপে প্রতিষ্ঠিত করা হয়।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
এও কথিত আছে, লালগোলার রাজা যগেন্দ্র নারায়ণ রায় এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেই কাল থেকে আজও পুজো হয়ে আসছে। দেবী এখানে চতুর্ভুজা রূপে পূজিতা হন। বর্তমানে মহাশ্মশানে বসেছে বিশেষ আলোকসজ্জা। এখনও এই মন্দিরে কালীপুজো পুজো দিতে আসেন বহু মানুষ। পাশাপাশি বছরের অন্যান্য সময়ও চলে পুজো। বিশেষ করে শনিবার ও মঙ্গলবার ভিড় জমান বহু সাধারণ মানুষ। আজ দিনভর বিশেষ পুজো চলছে বলেই জানা গিয়েছে ।