পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের প্যাঁচড়ার বাসিন্দার জীবনের শেষ স্বপ্ন, গ্রামে হাসপাতাল। সেখানে চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেন মানুষ, এটাই দেখে যেতে চান তিনি। অনেক অনুরোধ উপরোধ করেও কাজ হয়নি।
আরও পড়ুন- গ্রামে প্রকল্প হলে মিলবে চাকরি? ডেউচা-পাচামিতে দুই কন্যার কাহিনি
পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের পরিচালিত হৈমবতী প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র একটি চ্যারিটেবল ডিসপেনসারি। ১৯১৭ সালে যার পথ চলা শুরু। এলাকার মানুষের বিশ্বাসের জায়গা, সেখানেই রয়েছে জমি, আছে একতলা বাড়ি। ১টি বড় হলঘর ছাড়াও রয়েছে ৩ টি ছোট ঘড়। ডিসেম্বর ২০২০-র পর থেকে কোনও চিকিৎসক সেখানে বসেন না।
advertisement
নামমাত্র একজন স্টাফ। অথচ একসময় এখানেই বিনামূল্যে মানুষ পরিষেবা পেয়েছে। জেলা পরিষদ নয়, রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর পুরো জায়গা অধিগ্রহণ করে ছোটখাটো হাসপাতাল তৈরি করে দিক, এই প্রার্থনা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন অশীতিপর বৃদ্ধ।
প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ কার্যত মান্যতা দিয়েছে ৯২ বছরের বৃদ্ধের আর্জির। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের রিপোর্টের ওপর আস্থা না রেখে তাদের নতুন করে হলফনামা নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন- মাছের জালে আটকে পড়ল বিষধর শাঁখামুটি! ফণা তোলা সাপ দেখে চাঞ্চল্য
হলফনামা আদালতে সামনে এলে হাসপাতাল তৈরীর সম্ভাবনার বিষয়টি আদালতের বিবেচনায় আসতে পারে। রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী, হাসপাতাল গড়তে গেলে নূন্যতম ৩০০০০ জনসংখ্যার জনপদ হওয়া চাই। প্যাঁচড়া জনপদের জনসংখ্যা ২২৪০৫। কাছাকাছি ৩ টে স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়ার বিকল্প ব্যবস্থাও রয়েছে।
প্যাঁচরা, মশাগ্রাম ও দাদপুর সাব-সেন্টার যথাক্রমে ০.৫ কিলোমিটার, ২ কিলোমিটার ও ৮ কিলোমিটারের মধ্যে। তাই জমি ও পরিকাঠামো থাকলেও হাসপাতাল তৈরিতে আগ্রহী নয় রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর। জেলা পরিষদের তত্বাবধানেই রাখতে চায় রাজ্য।
ইতিমধ্যে এই মর্মে কলকাতা হাইকোর্টকে অবস্থানও জানিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর। আইনজীবী রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় জানান, হাসপাতাল তৈরীর সবরকম পরিস্থিতি রয়েছে এখানে। কেন্দ্রীয় সরকারেরও কিছু প্রকল্প রয়েছে গ্রামীণ এলাকায় স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার জন্য। আমরা আদালতের ওপর আশাবাদী। আশাবাদী জনস্বার্থ মামলাকারী ৯২ বছরের গুরুদাস বাবুও।অস্পষ্ট জড়ানো গলায় গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় ফোনে জানালেন, 'চোখ বোজার আগে গ্রামে হাসপাতাল দেখে যেতে চাই। দেখে যেতে চাই সবার চিকিৎসা হচ্ছে। আর কিছু চাই না।'