শনিবার দুপুরে ইসলামপুর থানার লোচনপুর পঞ্চায়েতের শ্রীরামপুর এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত পরপর ৪২টি বাড়ি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রান্নার উনুন থেকে আগুন একাধিক বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। তারপর রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুনের গতি বাড়ে। সেই আগুন পর পর ৪২টি বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে ঘরবাড়ি৷ প্রাথমিক ভাবে হতচকিত হয়ে গেলেও দ্রুত আগুন নেভানোর কাজে লেগে পড়েন স্থানীয়রা।
advertisement
বিধ্বংসী আগুনে ৪২টি বাড়ির সমস্ত আসবাবপত্র, প্রয়োজনীয় সামগ্রী, মজুত ফসল, নগদ টাকা সব পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কোনওরকমে জীবন হাতে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে প্রাণে বাঁচেন পরিবারের লোকেরা। খবর পেয়ে ইসলামপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ভাঙচুর চালায় ক্ষিপ্ত গ্রামবাসী। তবে দমকলের একটি ইঞ্জিন এসে আগুন নিয়ন্ত্রমে আনে। ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। ঘটনাস্থলে ছুটে য়ান রানিনগর ১নং ব্লকের বিডিও, ইসলামপুর থানার ওসি নির্মল দাস সহ অন্যান্যেরা।
বাড়ি ঘর সর্বস্ব হারিয়ে গোটা এলাকাজুড়ে এখন শুধুই কান্নার রোল। সরকারের কাছে সাহায্যের আর্জিও জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলি। কাঁদতে কাঁদতে ক্ষতিগ্রস্থ পারভিনা বিবি বলেন, ‘‘কোনও রকমে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছি। একটা জিনিসও বের করতে পারিনি। সবকিছু আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এইরকম ভয়ঙ্কর আগুন এর আগে কখনও দেখিনি।’’ ক্ষতিগ্রস্ত নাজিমুদ্দিন সেখ বলেন, ‘‘আমি নমাজ পড়ার জন্য বেরিয়েছিলাম। এসে দেখি বাড়ির ছাদে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। বালতি করে জল এনে নেভানোর অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু আগুনের বেগ এত বেশি ছিল যে নিমেষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।’’
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত আহাদ সেনের কথায়, ‘‘আমি বাড়িতে ছিলাম না। বাড়ি ফিরে এসে দেখি গোটা বড়িতে আগুন জ্বলছে। বাড়ির কোনও জিনিস বের করতে পারিনি। সব ছাই হয়ে গিয়েছে। কোথায় যাব, কী করব কিছু বুঝতে পারছি না। আমরা চাই সরকার আমাদের সাহায্য করুক।’’
ঘটনার খবর পেয়ে পড়লে ঘটনাস্থলে যান রানিনগরের বিধায়ক সৌমিক হোসেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির সঙ্গে কথা বলে তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন৷ তাদের হাতে তুলে দেন আর্থিক সাহায্য। তিনি বলেন, ‘‘৪২ টি বাড়ি সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছে। এই ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে থেকে তাদের সমস্ত রকমের সাহায্য করব।’’