সচেতন মানুষজন এখন ভিড় জায়গাগুলিকে এড়িয়ে চলতে চাইছেন। আর সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে, ব্যস্ততাময় জীবন ছেড়ে শহরের উপকন্ঠে নিরালা-নিভৃতে দু'দণ্ড সময় কাটাতে মন চাইলে, আপনার জন্য আদর্শ ভ্রমণ স্থান দক্ষিণ ২৪ পরগণার নলবুনি ইকো পার্ক (Nalbuni Eco park)। কলকাতা থেকে মাত্র ৫১ কিলোমিটার গেলেই পৌঁছে যাবেন প্রকৃতির কোলে তৈরি হওয়া এই ইকো পার্কে। ক্যানিং দু নম্বর ব্লকের জীবনতলা বাজার পেরিয়ে কালিকাতলায় অবস্থিত এই নলবুনি ইকো পার্ক।
advertisement
এখানে শুধু হাত পা ছড়িয়ে দু দণ্ড বিশ্রাম নয়। চাইলেই আপনি মাছ ধরা, রান্না করা, ব্যাডমিন্টন খেলার মজাও নিতে পারেন। সঙ্গে নৌকা বিহার, মেঠো পথে হাঁটার সুযোগ তো রয়েছেই। কালিকাতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের নলবুনি তে ২৫ বিঘা জমির ওপর পার্কটি তৈরি করেছে স্থানীয় পঞ্চায়েত। জীবনতলা-বাসন্তী সংযোগকারী রাস্তার উপরেই নলবুনি উদ্যান। কলকাতা থেকে যেতে সময় লাগবে প্রায় দেড় ঘণ্টার কিছু বেশি। কারণ মাঝে কিছুটা রাস্তার হাল খারাপ। পার্কের চারপাশে কয়েক হাজার বিঘা মেছো ভেড়ির মাঝেই, মরূদ্যানের মত একটি নিকাশি খাল রয়েছে। আর রয়েছে হরেক রকম প্রজাতির ফুল ও ফলের গাছ। যার অমোঘ আকর্ষনে বিভিন্ন ধরনের পাখি, ভিড় করে এই জায়গায়।
এমনই একটা পরিবেশ পর্যটনের জন্য আদর্শ। যেখানে নেই কোনও দ্রুত গতিতে ছুটে চলা গাড়ির হর্নের আওয়াজ। নেই ব্যস্ততাময় জীবনের কোলাহলের শব্দ। রয়েছে শুধুই নিস্তব্ধতা আর পাখিদের গুঞ্জন। যেন প্রকৃতির কোলে ডানা মেলে উড়তে চাইবে আপনার মন। যদি মনে করেন রাত কাটাবেন এই নিরালা পরিবেশে, তারও উপায় রয়েছে। রাত কাটানোর জন্য পার্কের ভিতর আধুনিক মানের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চারটি অতিথি নিবাস করা হয়েছে। রান্নার জন্য কিচেন রুমও আছে। নলবুনি ইকো পার্কের মাঝ বরাবর যে নিকাশি খাল রয়েছে তাতে রুই, কাতলা, তেলাপিয়া, চিংড়ি, কাঁকড়ার চাষ করা হয়। গোটা পার্ক জুড়েই বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষও চোখে পড়বে আপনার। পর্যটকরা চাইলে নিজেরাই মাছ ধরে, ক্ষেত থেকে প্রয়োজন মতো সব্জি তুলে রান্না করতে পারেন। আর যদি তা না করেন তবে, পছন্দসই খাবারের অনুরোধ করলে ওখানাকার শেফ-রা রেঁধে দিতে পারবেন নামমাত্র খরচায়।
আরও পড়ুন- পিতৃপক্ষেই হয় দেবীর বোধন! গ্রামের এই দুর্গাপুজোর নেপথ্যে রয়েছে প্রাচীন গল্প
নলবুনিতে (Nalbuni Eco park) সাধারণের প্রবেশের জন্য টিকিট মাত্র দশ টাকা। দিনের বেলায় ছেলে মেয়েদের ভিড় থাকলেও, সন্ধের পরে সাধারণের প্রবেশ নিষেধ। কেবল মাত্র যারা বুকিং করে আসবেন, তাঁরাই থাকতে পারবেন। তাই উইকেন্ডে পুজোর ছুটিতে দুটো দিন, কলকাতা ও সুন্দরবনের মাঝে এই অন্যরকম গ্রাম্য পরিবেশ দূর করবে আপনার শহুরে জীবনের ক্লান্তি। এক অন্যরকম ভালোলাগা তৈরি হবে নলবুনি ইকো পার্কে এলে। বারবার মন চাইবে এই পরিবেশে ধরা দিতে।
রুদ্র নারায়ণ রায়
আরও পড়ুন- মায়ের চোখের জল নিবারণ করতে শুরু পুজো! নন্দকুমারের দুর্গা আরাধনার নেপথ্যে বড় ইতিহাস
