প্রথমে বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছিল, প্রায় চল্লিশটি হাতি ঢুকেছে পূর্ব বর্ধমান জেলায়। এর পর হাতির প্রকৃত সংখ্যা হিসেব করতে ক্যামেরা লাগানো ড্রোন ওড়ায় বন দফতর। তা থেকে হিসেব করে প্রথমে মনে করা হয়েছিল, হাতির সংখ্যা আরও বেশি। পঞ্চাশটির মতো হাতি ঢুকেছে পূর্ব বর্ধমান জেলায়। কিন্তু পরবর্তী ক্ষেত্রে দেখা যায় ৫০ টি নয়, দলটিতে রয়েছে ৬২ টি হাতি। তার মধ্যে শাবক রয়েছে ৪-৫ টি। তার মধ্যে আবার একটির বয়স মাত্র ১২ দিন।
advertisement
আরও পড়ুন- রাতের অন্ধকারে পুলিশ হানা দিয়েছে, জানতে পেরেই যুবকের মর্মান্তিক পরিণতি!
সেই ১২ দিনের হস্তি শাবক দলের সঙ্গে হেঁটেছে টানা তিন দিন, ঘন্টার পর ঘন্টা। তা দেখেই অবাক সকলে। তিনদিন পর হাতির দলটি আউশগ্রামের জঙ্গলে বসে পড়ে। সেখানে আরও তিন দিন কাটানোর পর হাতির দলটিকে বাঁকুড়া জেলায় ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়েছে। বন দফতরের আধিকারিকরা বলছেন, লোক দেখে ভয় পেয়ে হাতির দল উত্তেজিত হয়ে পড়তে পারে ,এই আশঙ্কা সব সময় তাদের তাড়া করে বেরিয়েছে।
হাতিরা ভয় পেলে ক্ষয়ক্ষতি অনেকটা বাড়তো তো বটেই, প্রাণহানিও ঘটে যেতে পারত। কারণ, হাতির দল শাবকদের নিরাপত্তা নিয়ে ভীষণ রকমের সজাগ থাকে। শাবকদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে দেখলে তারা যে কোনও পদক্ষেপ নিয়ে নিতে পারতো। যেহেতু দলটিতে ১২ দিনের শাবক সহ একাধিক শিশু হাতি ছিল, তাই উদ্বেগ ছিল আরও বেশি। শাবকদের বিশ্রামের জন্যই আউশগ্রামের জঙ্গলে তারা তিন- চার দিন কাটিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছ।
আরও পড়ুন- পড়ুয়াশূন্য বিদ্যালয়ে ‘পড়ান’ একজন শিক্ষিকা! বিস্মিত হাইকোর্ট
হাতির হানায় গলসি আউশগ্রামে ধান চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবুও হাতির দলের শৃঙ্খলা দেখে অবাক বাসিন্দারা। তাঁরা বলছেন, হাতিগুলি শাবকদের মাঝে রেখে নির্দিষ্ট ছন্দে চলাফেরা করছিল। তাদের সবার সামনে ছিল এক দলপতি। দল পিছিয়ে পড়লে সে আওয়াজ করে তাকে ফলো করার নির্দেশ দিচ্ছিল। আবার সবার শেষে নজরদারিতে ছিল আর এক দাঁতাল। তাদেরই মাঝে নিয়ম মেনে চলাফেরা করেছে ১২ দিনের শাবকটি। তাকে একেবারেই সদ্যোজাত বলা যায়। সেও যে হাঁটাচলায় কম যায় না, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হতো না।