১৭৬৫ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সুন্দরবনের দেওয়ানি লাভ করেছিল। ১৭৭০ সালে তৎকালীন ২৪ পরগনা জেলার প্রথম জেলাশাসক ক্লড রাসেল সুন্দরবনের জমি ইজারা দেওয়া শুরু করেন। ঐতিহাসিকদের একাংশের দাবি, সুন্দরবন ধ্বংসের ওটাই ছিল শুরু। যে প্রক্রিয়া কালে কালে আরও বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বর্তমানে সেই সুন্দরবন একেবারে মুছে যাওয়ার মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। যাইহোক, ওটা অন্য প্রসঙ্গ। ইজারা দেওয়ার পর যথারীতি সুন্দরবনের জমি জরিপের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। এই কাজের জন্য উইলিয়াম ডাম্পিয়ার সুন্দরবনের নতুন কমিশনার নিযুক্ত হন। তাঁর অধীনে নতুন সার্ভেয়ার নিযুক্ত হন আলেকজান্ডার হজেস। তাঁরা দক্ষিণ রায়-বন বিবির খাস তালুকে জমি জরিপের কাজ শুরু করেন।
advertisement
আরও পড়ুন: বেহালার পর খড়্গপুর! বেপরোয়া অডির ধাক্কায় নিহত পুলিশ অফিসার, মৃত গাড়ির দুই আরোহীও
ইতিহাসের পাতায় ডাম্পিয়ার-হজেস লাইন বিখ্যাত। সেটা ওই সময়ই টানা হয়েছিল সুন্দরবনের সীমান্ত নির্ধারণ করার জন্য। সেই রেখা দিয়ে এখনও পুরানো সুন্দরবন এবং ক্ষয়প্রাপ্ত সুন্দরবনের পর্যালোচনা করা হয়। এই সার্ভে চলাকালীন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সুন্দরবনের একেবারে দক্ষিণ প্রান্তে এসে পৌঁছয়। নিজেদের প্রয়োজনে তারা রাস্তা তৈরি করে। পরবর্তীকালে যার নাম হয়ে যায় কোম্পানির রাস্তা। এই কোম্পানির রাস্তার একপ্রান্তে ছিল ঘন জঙ্গল। অপর প্রান্তে বসতি। এখানেই ইংরেজরা তাদের শেষ ক্যাম্প তৈউরী করে, পরবর্তীকালে যার নাম হয় কোম্পানির ঠেক। ইংরেজ দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছে বহুকাল আগে। কিন্তু এখনও স্বাধীন ভারতে সমানভাবে বিদ্যমান কোম্পানির ঠেক ও কোম্পানির রাস্তা।
তবে বর্তমানে কোম্পানির রাস্তার অপর প্রান্তে নেই কোনও জঙ্গল। সুন্দরবন সরে গিয়েছে আরও অনেক দূরে। তবে রাস্তার দু’পাশে এখনও অনেক প্রাচীন গাছ দেখা যায় যারা সেই অতীতের জঙ্গলের স্মৃতি বহন করছে।
নবাব মল্লিক