সালটা ২০১৯। অনেক স্বপ্ন নিয়ে কেরিয়ারের প্রথম স্টেট মিটে রেস ওয়াকিংয়ে নেমেছিলেন পূজা প্রামাণিক। কিন্তু মাঝপথেই মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার পর তাঁর জীবনে অন্ধকার নেমে আসে। প্রচণ্ড পুষ্টির অভাব ছিল দরিদ্র পরিবারের মেয়ে পূজার শরীরে। কিন্তু লোকে সেটা বুঝলে তো! চারদিক থেকে ধেয়ে আসা বিদ্রুপে তিনি কিছুটা গুটিয়েই গিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন - বাইকে করে অফিস যাচ্ছিলেন, ডাম্পারের চাকায় পিষে গেল...
advertisement
তবে এবার ন্যাশনাল গেমসে বাংলার একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ব্রোঞ্জ জয় করে সবার মুখ বন্ধ করে দিয়েছে পূজা।তার বক্তব্য আমি কোনদিনও হার মানিনি ।একটা সময় ছিল রেস ওয়াকিং করে যে রাজ্য দেশের নাম উজ্জ্বল করা যায় সেটাই জানতাম না ।সেখান থেকে ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট সিনিয়র অ্যাটলেটিক চ্যাম্পিয়নশিপে কুড়ি কিলোমিটার এর রূপো জিতে ছিলাম । জাতীয় গেমস বুঝিয়ে দিয়েছে দেশের নিজের ইভেন্টে আমি তিন নম্বরে আছি। তাহলে এই ব্যবধানটুকু থাকে কেন।
আরও পড়ুন - Siliguri News: ডেঙ্গি নিয়ে ডামাডোল! কার জন্য ছড়াচ্ছে রোগ, জোর কাদা ছোঁড়াছুড়ি
নিজের এই প্রবল আত্মবিশ্বাসের জন্য তিনি কৃতিত্ব দেন তার দুই কোচ অমিতাভ রায় ও মনোজ দাস কে। পূজা বলেছেন ওদের কথাতেই চলতি বছরের শুরুতে হরিয়ানাতে ট্রেনিং এর সুযোগ পাই এখন আছি উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনে ওখানে সিনথেটিক ট্র্যাকে অনুশীলনের সঙ্গে দেশের সেরা রেস ওয়াকার দের সঙ্গে অনুশীলন আমাকে বদলে দিয়েছে। কিভাবে সেখানে প্র্যাকটিস চলে প্রশ্নের উত্তরে পূজার বলে যে আমরা ছয় সাত ঘন্টা দিনে ট্রেনিং করলেও একটানা করি না তিন ঘন্টা পাহাড়ে চললাম তো পরের তিন ঘন্টা সমতলে এতে বেশি চাপ নেওয়ার ক্ষমতা তৈরি হয়ে যায়। নানান রকম সমস্যার মধ্যেও আমরা প্রশিক্ষণ চালিয়ে যাই।
পূজার মায়ের কথায় পূজার বাবা চলে যাবার পরে অনেক কষ্টের মধ্যে আমি মেয়েকে মানুষ করেছি। ওর বাবারও স্বপ্ন ছিল মেয়ে একদিন দেশের হয়ে সোনা নিয়ে আসবে। সোনা আসেনি ব্রোঞ্জ এসেছে। কিন্তু আমার মেয়ের ওপর দৃঢ় বিশ্বাস সে একদিন সোনা জয় করে দেশের নাম উজ্জ্বল করবে। আক্ষেপ একটাই পূজার বাবা সেটা দেখে যেতে পারল না। আজ ওর বাবা থাকলে খুব খুশি হত। ওর স্বপ্ন সফল করতে যা যা করার দরকার ও করুক। আমি চাই যেন ও ওর স্বপ্ন পূরণ করতে পারে, তার জন্য যা যা দরকার আমি সবটাই করব।
Anirban Roy