আরও পড়ুন: মমতা -অভিষেকের সামনে এইভাবে হাতে বোনাস পেলেন শ্রমিকেরা! বিশ্বকর্মা পুজোয় মহাচমক
প্রথা মেনে কয়েক হাজার মানুষের উপস্থিতিতে ভাদ্র মাসের শেষ দিন রাজ পরিবারের বর্তমান সদস্য অমিতকুমার লাল সিংহদেও ছাতা উত্তোলন করেন। তাঁকে দেখতে পুরুলিয়া ছাড়াও প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ড থেকেও বহু মানুষ ভিড় জমান। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে চাকলতোড় মাঠে বসে বিরাট মেলা। আদিবাসী জনজাতির মানুষেরা এই মেলায় অংশগ্রহণ করেন। বংশপরম্পরায় এই উৎসব পালিত হয়ে আসছে মানভূমে। কথিত আছে , পঞ্চকোট রাজবংশের এক রাজা যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন। সেই সময় তাঁর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। ক্রমেই দুশ্চিন্তা বাড়ছিল পরিবারের মধ্যে। সেই সময় হঠাৎই একদিন খবর আসে রাজা যুদ্ধে বিজয়ী হয়েছেন। সেই বিজয় সংবাদ প্রজাদের মধ্যে পৌঁছে দিতেই জয়ের প্রতীক হিসাবে ছাতা তুলে বিজয় বার্তা ঘোষণা করা হয়েছিল। তারপর থেকেই এই রীতি প্রচলিত হয়ে আসছে।
advertisement
ছাতা পরব প্রসঙ্গে রাজ পরিবারের বর্তমান সদস্য দুর্গাপ্রসাদ লাল সিংদেও বলেন, প্রথা মেনেই ছাতা পরব চলছে যুগ যুগ ধরে। ছাতা উত্তোলনের সময় রাজা নিজের মুখে কোনও কথা বলেন না, এটাই নিয়ম। এই পরবকে ঘিরে নানান আচার অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। মেলা বসে।
ছাতা পরবে দেখতে আসা এক ব্যক্তি জানান, ছোটবেলা থেকেই তিনি এই উৎসব দেখতে আসছেন। প্রতিবছরই এই উৎসব দেখতে সপরিবারে আসেন। রাজ পরিবারের এই ছাতা পরব উৎসব পুরুলিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের কাছে বরাবরই আকর্ষণীয়। কাতারে কাতারে মানুষ ভাদ্র মাসের শেষ দিন চাকলতড় মাঠে ভিড় জমান। এই একটা দিনের জন্য চাকলতোড় রাজবাড়ির রাজকুমার অমিতকুমার লাল সিংহদেও প্রজাদের কাছে রাজা হিসেবে খ্যাতি ও সমাদর পান। পেশায় আলোকচিত্রী হয়ে ওঠেন একদিনের রাজা। তাঁর পরনে থাকে রাজবেশ, কোমর থেকে ঝলকায় তরবারি। একটা সময় পর্যন্ত ঘোড়ার পিঠে চেপে রাজা ছাতা উত্তোলন করতেন। কিন্তু বর্তমানে যুগ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ঘোড়ার বদলে এসেছে চারচাকা গাড়ি। রীতি মেনে প্রথমে চারচাকা গাড়ি প্রদক্ষিণ করে ছাতাকে। এরপর বেদীতে উঠে রাজা সাদা রুমাল উড়ইয়এ দেন। আর সেই সঙ্কেত দেখেই প্রজারা ছাতা উত্তোলন করেন।
শমিষ্ঠা ব্যানার্জি