সুদীর্ঘ পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে তারা মাছ ধরার এই বিত্তি তৈরি করেন। তবে তাদের তৈরি এই কুটির শিল্পের চাহিদা নির্ভর করে বৃষ্টির সাথে। বৃষ্টি বাড়লে বেচাকেনা বাড়ে, আর বৃষ্টি না হলে ভাটা পড়ে তাদের বেচাকেনায়। তবে নিজেদের এই কাজের বর্তমান অবস্থা প্রসঙ্গে আক্ষেপের সুর শিল্পীদের গলায়।
আরও পড়ুন ঃ ঠিক মতো নৌকা না থাকায় যাতায়াতে ব্যাপক সমস্যা নিত্যযাত্রীদের, ক্ষোভ বাড়ছে পূর্বস্থলীতে
advertisement
নিজেদের এই কাজ ও বর্তমান অবস্থা প্রসঙ্গে কোমডাঙ্গার এককুটির শিল্পীর প্রতিক্রিয়া, “এটা কোমডাঙ্গা, দক্ষিণপাড়া। এই জিনিসকে আমরা বিত্তি বলি। এটা একটা কুটির শিল্প। এই কাজ আমি ৪৫ বছর ধরে করছি। এখানে ২৫ থেকে ৩০ ঘর আছে সবাই এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। এই বিত্তি তৈরী করেই আমাদের রুজি রোজগার হয় এর উপরেই নির্ভরশীল।”
এবছর পরিমাণ মতো বৃষ্টি না হওয়ায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে এই বিত্তি শিল্পীদের কপালে। নিজেদের বাপ ঠাকুরদার সময় থেকে এই কাজ চলে আসলেও এই গ্রামের শিল্পীদের নেই কোন সরকারি স্বীকৃতি। যার জেরে বেশ খানিকটা ক্ষুব্ধ কোমডাঙ্গার কুটির শিল্পীরা।
আরও পড়ুন ঃ ১৫০ কোটির অ্যাপ জালিয়াতি কাণ্ডে গ্রেফতার মূল চক্রী ‘গরুর ডাক্তার’!
এই কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকা গ্রামের গৃহবধূদের কথায়, বিত্তি বানানোর পর ঠিক মত বিক্রি না হওয়ায় এই কাজ চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে তাদের জন্য। প্রতিবছর বৈশাখ মাস থেকে এই বিত্তি বিক্রির মরসুম শুরু হয় এবং যা চলে দুর্গা পুজা পর্যন্ত বছরের বাকি সময় তারা অনেকেই যুক্ত থাকেন চাষবাসের সঙ্গে। এই গ্রামে পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারাও পাল্লা দিয়ে এই কাজ করেন।
মাছ ধরার এই বিত্তি বানানোর পদ্ধতি প্রসঙ্গে এক শিল্পী বলেন, “প্রথমে বাঁশ কেটে আনতে হয়। সেই বাঁশ টাকে কেটে কুটি কুটি করে কাঠি তৈরী করতে হবে। তারপর কাঠি জলে ভেজাতে হবে এবং আবার কাঠি গুলোকে শুকোতে হবে এবং এরপর কাঠি গুলোকে মেজে তারপর বুনতে হবে।”
আরও পড়ুন ঃ আল কায়দার ‘গুজরাট’ মডেল! রাজকোটে ধৃত বাংলার ৩
শিল্পীদের সূত্রে জানা গিয়েছে তাদের তৈরি ছোটো বিত্তি গুলি স্থানীয় হাটে ১০০ থেকে সাড়ে তিনশ টাকায় বিক্রি হয়। মাঝারি মাপের বিত্তিগুলি বিক্রি হয় ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা পর্যন্ত দরে। তবে এই বিক্রি সবটুকুই নির্ভর করে বৃষ্টির উপর বৃষ্টি না হলে বেচা কেনায় ভাটা পড়ে এই কুটির শিল্পীদের। অবিলম্বে তাই সরকারি স্বীকৃতি ও সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছে কেতুগ্রাম দু নম্বর ব্লকের কোমডাঙার বিত্তি তৈরির সাথে যুক্ত থাকা পরিবার গুলি।