মঙ্গলবার দুপুরে গোপন সূত্রে খবরের ভিত্তিতে বর্ধমান রেলওয়ে ইনস্টিটিউটে অভিযান চালিয়ে আরপিএফ অফিসারেরা চাকরি প্রতারণা চক্রের মূল পান্ডা-সহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করে।পাশাপাশি ঘটনাস্থলে উপস্থিত চারজন চাকরি প্রার্থীকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বর্ধমান রেল স্টেশনের আরপিএফ পোস্টে নিয়ে আসা হয়।
আরও পড়ুন: হাসপাতালে জায়গা নেই, মিলছে না এক ফোঁটা জলও! লিবিয়ায় শুধুই মৃতদেহের সারি
advertisement
আরপিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযান চালানোর সময় ধৃতদের কাছ থেকে টিসি/টিই (গ্রুপ-সি) পদের জন্য দেবজিত মালি নামে এক প্রার্থীর জন্য তৈরি করা ৩ পাতার একটি জাল নিয়োগপত্র। ভারতীয় রেলের গ্রুপ-ডি পদের জন্য ৬টি জাল নিয়োগ ফর্ম। ৭টি জাল RRB OMR সীট। ১টি জাল জয়নিং রেজিস্টার। ১জন প্রার্থীর জাল ফিঙ্গার প্রিন্ট রেজিস্টার। ১টি জাল হাজিরা রেজিস্টার। ৩টি ৪ পাতার প্রশ্নপত্র। ৩টি আইডি কার্ড পাওয়ার আবেদনপত্র। ১টি রাবার স্ট্যাম্প, যেটি সেক্রেটারি আরআরসি কলকাতা ইস্টার্ন রেলওয়ে চিৎপুর কল-৩৭ এর নামে তৈরি করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: বিমানেও নেই নিরাপত্তা! গত দুমাসে এ নিয়ে চারবার ঘটল শ্লীলতাহানি ঘটনা
১টি সিনিয়র পার্সোনাল অফিসার রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের রাবার স্ট্যাম্প। ১টি ভারতীয় রেলওয়ের স্ট্যাম্প এবং ১টি ফেবার ক্যাসেলের স্ট্যাম্প প্যাড বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত সমস্ত নথিই প্রতারণা চক্রের মূল পান্ডার দায়িত্বেই ছিল বলে আরপিএফ-এর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।এছাড়াও অভিযুক্তদের প্রত্যেকের কাছে থাকা মোবাইল ফোন গুলোকেও বাজেয়াপ্ত করেছে আরপিএফ। আরপিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের বর্ধমান থানার হেফাজতে দেওয়া রাখা হয়েছে।
ক্রাইম ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ (CIB) মারফত বর্ধমানে একটি ভুয়ো চাকরি চক্রের কর্মসূচির বিষয়ে খবরের ভিত্তিতে মঙ্গলবার দুপুর প্রায় সাড়ে ১২টা থেকে বর্ধমান রেলওয়ে ইনস্টিটিউটের ওপর নজরদারি শুরু করে আরপিএফের একটি স্পেশাল টিম। হলের দরজা বন্ধ করে ভিতরে যখন অভিযুক্তরা প্রার্থীদের ট্রেনিং দেওয়ার নামে নিজেদের কাজকর্ম করছিল, সেইসময় আরপিএফের আচমকা অভিযানে অভিযুক্তরা ঘাবড়ে গিয়ে টেবিলে রাখা বেশ কিছু নথি সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু আরপিএফ এর অফিসারদের তৎপরতায় হল ঘরের ভিতরে উপস্থিত ৭জনকে হাতেনাতে ধরা পরে।
তাদের সঙ্গে থাকা সমস্ত নথি বাজেয়াপ্ত করে আরপিএফ। রেলের গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি পদে চাকরির টোপ দিয়ে চাকরী প্রার্থীদের নিয়োগের বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য এদিন বর্ধমানের রেলওয়ে ইনস্টিটিউট ভাড়া করে আউশগ্রাম,বুদবুদ ও কেতুগ্রাম থেকে আসা বেশ কয়েকজন চাকরীপ্রার্থীকে একত্রিত করা হয়েছিল।রেলের গ্রুপ ডি ও সি পদের চাকরির জন্য ৫ লাখ টাকা করে দাবী করেছিলো ধৃতরা। সেই মতো অনেকেই গত এক বছরে ধাপে ধাপে প্রায় এক লক্ষ টাকা করে প্রতারকদের মিটিয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে।