হ্যাঁ অনেক জেলাতেই হয়তো ইতিমধ্যেই মুক্ত চাষ হচ্ছে। তবে পূর্ব বর্ধমানের এই প্রথম শুরু হল মুক্ত চাষ। পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের পালিশ গ্রামের ইসাহক শেখ নিজের পুকুরে মুক্ত চাষ করে তাক লাগালেন জেলাবাসীকে। মাছ চাষ করা পুকুরেই মুক্ত চাষ করলেন তিনি। প্রাথমিকভাবে দেড় হাজার টি ঝিনুক থেকে মুক্ত চাষ করেন তিনি। মনে হচ্ছে তো বিশাল খরচ এই চাষে। না একদমই না, শুনলে অবাক হবেন মাত্র কিছু টাকা ব্যয় করে আপনি লক্ষ্মীর ভান্ডার ভরিয়ে ফেলতে পারবেন এই একটি চাষ দিয়েই।
advertisement
মুক্তোচাষের জন্য পুকুর না থাকলে একটি পুকুর খনন করেও নেওয়া যেতে পারে। এই চাষের জন্য প্রশিক্ষণের দরকার। মুক্তোর চাষ লাভজনক হওয়ায়, এই চাষের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। লাখ লাখ টাকা উপার্জন করছেন মুক্তো চাষিরা।
কী ভাবে এই মুক্তো চাষ হচ্ছে:
মুক্তো চাষের জন্য তিনি ১০ x ১০ ফুট পুকুরে চাষ করেছেন। যদিও অনেকেই এই মুক্তো চাষ করে থাকেন বাড়ির চৌবাচ্চায়। এই চাষের উপযুক্ত সময় অক্টবর থেকে ডিসেম্বর। বাজার থেকে ঝিনুক কিনে এনতে হবে। প্রতিটি ঝিনুকে সার্জারি করতে হবে। আর এরপর সেই ঝিনুকগুলিতে বাজার থেকেই কেনা আকার বা ডিজাইনের বিড প্রবেশ করাতে হবে। ব্যাস তার পর ঝিনুকের মুখ বন্ধ করে পুকুরে ছেড়ে দিতে হবে।
তবে এক্ষেত্রে তারের জালে প্রতিটি ঝিনুককে আটকে দিতে হবে। আর মনে রাখতে হবে পুকুরে ঝিনুক ছাড়ার সময় একটি দড়ির মধ্যে সব কটি ঝিনুককে সারিবদ্ধ ভাবে রাখতে হবে। বোতলের সাহায্যে জলের কিছুটা নিচে ডুবে থাকবে ঝিনুক গুলি। টানা দেড় বছর যদি জলে ফেলে রাখা যায় ঝিনুকগুলি, তাহলে মুক্তো চাষ ভালো হবে। কেউ চাইলে আরও বেশি দিন রাখতে পারেন।
খরচ কত?
একটি ঝিনুক বাজার থেকে কিনতে খরচ হয় ৬০ থেকে ১০০ টাকা। কম দামেরও ঝিনুক পাওয়া যায় বাজারে। কেউ যদি ১হাজার ঝিনুক কেনেন তাহলে তার খরচ হবে ৬০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ। আর তেমন কোনো খরচ নেই এই চাষের জন্য। আলাদা করে কোনও কিছুই দিতে হয়না পুকুরে। মাছের খাবার যা ঝিনুকের খাদ্যও তাই।
লাভ কত?
ঝিনুক কিনতে যা খরচ হয় তার দ্বিগুণ লাভ হয় মুক্ত বিক্রি করে। কিনতে খরচ প্রতি ঝিনুক ৬০ থেকে ১০০ কিন্তু মুক্তো বিক্রি হয় অন্তত ২০০ টাকা প্রতি পিস। ১ হাজার ঝিনুক পুকুরে দিলে সেখান থেকে সব ঝিনুকে মুক্তো না বেরোলেও ধরা হয় ১০০০ থেকে ৮০০ মুক্তো মিলবেই। কারণ অনেক ঝিনুক জলেই মারা যায়। অর্থাৎ ৬০ হাজারের মুক্তা কিনে তা বিক্রি করে দুই থেকে তিন লাখ টাকা পাওয়া যেতে পারে। ফলে যত চাষ তত লাভ।
আরও পড়ুন: খালের ধারে ওটা কী? পচা গন্ধের সন্ধানে সামনে এল লাশ! মারাত্মক কাণ্ড
কি রকম জলে হয় মুক্তো
ঝিনুক থেকে মুক্তো চাষের সময় পুকুরের কিছু জিনিস নজরে রাখতে হয়। যেমন জলের পিএইচ মাত্রা ৬.৫ থেকে ৮.৫ আছে কিনা, অক্সিজেন চার এর ওপর থাকতে হয়, অ্যামোনিয়ার মাত্রা শূন্য থেকে .২৫ লাগে। জলের স্তর আট থেকে দশ ফুট থাকা চাই।
আরও পড়ুন: Nadia News|| ওষুধ খাইয়ে অচৈতন্য করে মাথায় মেরে খুন! স্বামীর খুনের পুনর্নির্মাণ করল স্ত্রী
মুক্তো চাষের প্রশিক্ষণ:
ওড়িশার ভুবনেশ্বরে মুক্তো চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এছাড়াও মেদিনীপুরেও মুক্তো চাষের প্রশিক্ষন দেওয়া হয়। কৃষক এবং শিক্ষার্থীদের মুক্তো উত্পাদন সম্পর্কে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলিতে প্রযুক্তিগত এবং বৈজ্ঞানিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
Malobika Biswas





