শৈশব মনে রাখতে না পারাকে বলা হয় চাইল্ডহুড অ্যামনেশিয়া। বিজ্ঞানীরা বলছেন যেখানে আপনি হয়তো কয়েক মাস আপনার দ্বিতীয় জন্মদিনের উদযাপন মনে রাখতে পেরেছেন, কিন্তু পরে এই স্মৃতিগুলি ঝাপসা হয়ে শেষ পর্যন্ত চিরতরে চলে যাবে। গবেষকরা বলছেন, এর একটি কারণ হল শৈশবে, নতুন স্মৃতি দ্রুত পুরনো স্মৃতি প্রতিস্থাপন করে।
advertisement
স্মৃতিগুলো ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়৷
একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে ৩ বছর বয়সীরা আগের বছরের অনেক ঘটনা মনে করতে পেরেছে। গবেষণায় জানা গিয়েছে মনে রাখতে পারার এই প্রক্রিয়া ৭ বছর বয়স পর্যন্ত চলতে থাকে৷ কিন্তু ৮ থেকে ৯ বছর বয়সের মধ্যে, শিশুরা সেই সময়ের মাত্র ৩৫ শতাংশ মনে রাখতে সক্ষম হয়েছিল।
স্মৃতি তৈরির প্রক্রিয়া
গবেষকরা বলছেন, এই পরিবর্তন শিশুদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্মৃতি গঠনের প্রক্রিয়ার সাথে সম্পর্কিত। ৭ বছর বয়স থেকে শিশুরা রৈখিক স্মৃতি জমা করতে শুরু করে যা সময় এবং স্থানের ধারনা তৈরি করতে সক্ষম। ঘটনাগুলি মনে রাখার এবং নিজের ব্যক্তিগত টাইমলাইন অনুসারে সাজানোর প্রক্রিয়াই ভুলে যাওয়ার মূল কারণ। এই প্রক্রিয়াটি বয়স্কদের, শিশুদের এবং প্রাপ্তবয়স্কদের পুরোনো স্মৃতি ভুলে যেতে বাধ্য করে।
আরও পড়ুন: বাচ্চা গিলে ফেলেছে চ্যুইংগাম! কোন সর্বনাশ হতে পারে? কী করা উচিত? জেনে নিন ডাক্তারের পরামর্শ
কিন্তু কেন আমরা আমাদের শৈশবের স্মৃতি ভুলে যাই তা বোঝার জন্য, আমাদের বুঝতে হবে কিভাবে পুরানো স্মৃতি বা অভিজ্ঞতা আমাদের মস্তিষ্কে “ছাপ” ফেলে। শিশুরা সিমেন্টিক এবং এপিসোডিক, দুই প্রকার স্মৃতির উপর নির্ভরশীল। সিমেন্টিক স্মৃতিগুলি এমন ধারণাগুলির প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে গঠিত হয় যা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে গঠিত হয় না৷ যেমন রঙের নাম বা ইতিহাসের ঘটনা।
অন্যদিকে, এপিসোডিক স্মৃতি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে গঠিত হয়৷ যেমন স্কুলের প্রথম দিনের স্মৃতি ইত্যাদি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, এপিসোডিক স্মৃতি সিমেন্টিক স্মৃতিতে পরিণত হয়। যেমন আমরা প্রথম বন্ধুর সাথে কীভাবে খেলতাম তা মনে নেই, তবে প্রথম বন্ধু কে ছিল তা মনে আছে।