সাধু শব্দের আভিধানিক অর্থ হল একজন ভদ্রলোক। অর্থাৎ একজন ভাল মানুষ, যিনি জগতের সকল বন্ধন ছিন্ন করে নিজের শরীর, মন ও সম্পদ ভগবানকে উৎসর্গ করেছেন। ঈশ্বর ছাড়া যাঁর আর কিছুই নেই। সমস্ত মোহ-মায়া ত্যাগ করেছেন যিনি, তিনিই সাধক।
আরও পড়ুন- মহাশিবরাত্রিতে নামমাত্র খরচে বাংলার এই শিবমন্দিরগুলি দেখলে মুগ্ধ হয়ে যাবেন
advertisement
হালফিলে গেরুয়া রঙ নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। অরিজিৎ সিং কলকাতার কনসার্ট থেকে বলেছেন- গেরুয়া রঙটা তো সন্নাসীদের। সত্যিই তাই। গেরুয়া রঙের পোশাকেই বেশিরভাগ ঋষি-সাধুদের দেখা যায়।
দিনের শুরুতেই প্রকৃতিতে গেরুয়া রঙের ঝলক দেখা যায়। সূর্যের প্রথম আলোতে শুধুমাত্র গেরুয়া রঙই থাকে। অর্থাৎ গেরুয়া রঙ বিশ্বের শক্তি ও চেতনার জীবনী রূপ।
গেরুয়া রঙের পোশাক জীবনের আলো এবং ভোরের সূচক হিসাবে বিবেচিত হয়। গেরুয়া রঙ শক্তি এবং ত্যাগের প্রতীক হিসাবে বিবেচিত হয়। কথিত আছে গেরুয়া রঙের পোশাক পরলে মন শান্ত থাকে।
সাধু ও তপস্বীরা সর্বদাই প্রকৃতির কাছাকাছি থাকেন। হিমালয়ের গুহায় বসবাসকারী সাধুরা হোক বা গঙ্গা নদীর তীরে শিবিরে থাকা সাধু, তাঁরা সবাই প্রকৃতি থেকেই জীবনচক্র বোঝেন। যেমন, গাছ লোভ ছাড়াই ফল দেয়। পৃথিবী মাতৃরূপে স্বার্থপরতা ছাড়াই সকল জীবকে থাকার জায়গা দেয়।
একইভাবে প্রকৃতির কোথাও আবার গেরুয়া রঙের ভিন্ন আভা ও মহিমা দেখা যায়। কোনও কোনও ফল পাকলে সেটি সাধারণত কমলা রঙে পরিণত হয়। তাই গেরুয়া বা কমলা রঙকে পরিণত হওয়ার প্রতীক হিসেবেও বিবেচনা করা হয়।
আরও পড়ুন- জলপ্রপাতে জলের বদলে বইছে আগুন! প্রকৃতির অদ্ভুত রহস্য জানলে আশ্চর্য হবেন
যোগী এবং ঋষিরা নিজেদের চেতনাকে ঈশ্বরের শক্তির সঙ্গে সংযুক্ত করেন। তাই জ্ঞানী মানুষেরা জীবনচক্রের সঙ্গে কমলা বা গেরুয়া রঙ যুক্ত করেন।
আধ্যাত্মিকতার দিক থেকে বিচার করলে, মানবদেহে অনেকগুলি চক্র রয়েছে। প্রতিটি চক্রের আলাদা রঙ এবং বৈশিষ্ট্য রয়েছে। অগ্নিচক্রকে জ্ঞান অর্জনের সূচক হিসাবে বিবেচনা করা হয়। জ্ঞান চক্রের রঙ জাফরান। যাঁরা জ্ঞান অর্জনের দিকে অগ্রসর হন এবং সর্বোচ্চ চক্রে পৌঁছতে চান, তাঁরা গেরুয়া রঙের পোশাক পরেন।