হুইস্কি
হুইস্কি একটি ডিস্টিল্ড পানীয়, যা যব, গম বা ভুট্টা ফারমেন্ট করে তৈরি করা হয়। সাধারণত হুইস্কিকে বিশেষ স্বাদ দেওয়ার জন্য এটি জ্বাল দেওয়া সাদা ওকের কাঠের পাত্রে রাখা হয়। বলা হয়, হুইস্কির উৎপত্তি খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকে গ্রীসে হয়েছিল, যখন সুগন্ধি তৈরির জন্য স্পিরিট ডিস্টিল করা হত। ১৩শ শতকে ইতালিতে প্রথম হুইস্কিকে পানীয় ও ওষুধ হিসেবে তৈরি করা হয়। তার পর এটি স্কটল্যান্ডে অত্যন্ত জনপ্রিয় এক পানীয়ে পরিণত হয়।
advertisement
হুইস্কিকে প্রধানত দুই ধরনের মধ্যে শ্রেণিবদ্ধ করা হয় — গ্রেন হুইস্কি বা মল্ট হুইস্কি। মল্টিং তখন হয়, যখন শস্যকে ফারমেন্ট করার আগে অঙ্কুরিত করা হয়। ফারমেন্টেশনের পর হুইস্কিকে ডিস্টিল করা হয় এবং তারপর কাঠের ব্যারেলে রাখা হয়। বোতলজাত হওয়ার পর হুইস্কির রঙ আর পরিবর্তিত হয় না। পোড়ানো কাঠের ব্যারেলে রাখা হলে হুইস্কির রঙ হয় সোনালি-বাদামি।
হুইস্কিতে সাধারণত ৪০% থেকে ৫০% পর্যন্ত অ্যালকোহল থাকে।
সিঙ্গল মল্ট: একই ধরনের শস্য এবং একটি মাত্র ডিস্টিলারি থেকে তৈরি হুইস্কি।
ব্লেন্ডেড মল্ট: বিভিন্ন ডিস্টিলারি থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন মল্ট হুইস্কির মিশ্রণ।
ব্লেন্ডেড: মল্ট ও গ্রেন হুইস্কির মিশ্রণ, যার সঙ্গে স্পিরিট, রং এবং স্বাদ যোগ করা হয়।
সিঙ্গল ক্যাস্ক: হুইস্কির বোতল একটি নির্দিষ্ট পিপেতে সংরক্ষিত হুইস্কি থেকে ভরা হয়।
ক্যাস্ক স্ট্রেংথ: এমন হুইস্কি যা কোনওরকম মিশ্রণ ছাড়াই সরাসরি পিপে (ব্যারেল) থেকে বোতলজাত করা হয়।
রাম (Rum)
রাম হল আখের রস বা গুড় থেকে তৈরি একটি ডিস্টিল্ড পানীয়। রাম ও হুইস্কির মধ্যে পার্থক্য কী? রাম আখ থেকে তৈরি হওয়া একটি মদ, যেখানে হুইস্কি হয় ফারমেন্ট করা শস্যের মিশ্রণ থেকে তৈরি।
এর পর ওই তরলকে কাঠ বা পোড়ানো ওকের ব্যারেলে রেখে এর রঙ গাঢ় করা হয় এবং সেইসঙ্গে স্বাদ আরও গভীর ও অনন্য হয়ে ওঠে। অনেক সময় রামকে তার নির্দিষ্ট রঙ দিতে এতে গুড়, চিনি বা ক্যারামেল মেশানো হয়। রামে সাধারণত ৪০ শতাংশ অ্যালকোহল থাকে।
রামের কোনও নির্দিষ্ট ইতিহাস নেই, তবে এর উৎপত্তি নিয়ে বহু গল্প প্রচলিত। আজকের দিনে রামের বেশিরভাগ উৎপাদন ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে হয়। মনে করা হয়, সেখানকার প্ল্যান্টেশনের কর্মীরাই প্রথম বুঝতে পেরেছিলেন, গুড় ফারমেন্ট করে মদ তৈরি করা যায়। রামের স্বাদ এর উৎপাদনস্থানের ওপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে। এর রঙ ও ঘনত্বও এক ব্র্যান্ড থেকে আরেক ব্র্যান্ডে আলাদা হয়। ডিস্টিলেশনের পর রামকে তার রঙ ও স্বাদ দিতে অন্তত এক বছর ধরে কাঠের পিপেতে সংরক্ষণ করা হয়।
ভদকা (Vodka)
ভদকা একটি ডিস্টিল্ড স্পিরিট, যা সাধারণত আলু থেকে তৈরি হয়। তবে এটি ভুট্টা, গম, চাল এবং জোয়ার জাতীয় শস্য থেকেও তৈরি করা যেতে পারে। আলুকে প্রথমে ফারমেন্ট করা হয়, যার ফলে তাদের প্রাকৃতিক চিনি মুক্ত হয়। এই তরলে ইস্ট (খমির) মেশানো হয় যাতে শর্করাগুলি ফারমেন্ট হতে পারে।
আরও পড়ুন- যে ফুলে লুকিয়ে আছে আশ্চর্য নিরাময়ের গুণ, অথচ নাম তার ‘বাংলার আতঙ্ক’! কেন জানেন?
ফারমেন্টেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর তরলটিকে একাধিকবার ডিস্টিল করা হয়। ডিস্টিলেশনের সময় তরলটিকে ফোটানো হয় এবং এর ফলে উৎপন্ন হওয়া অ্যালকোহল বাষ্প সংগ্রহ করা হয়, এই বাষ্প ঠান্ডা হলে তরলের রূপ নেয়, যা শেষে ভদকা হয়ে যায়।
বিয়ার (Beer)
বিয়ারে থাকে জল, হপস, ইস্ট এবং যব। যব থেকে চিনি বের করা হয়। তার পর সেটিকে ইস্টের সাহায্যে ফারমেন্ট করা হয়। বিয়ার গম, চাল ও ভুট্টা থেকেও তৈরি করা যেতে পারে। বিয়ারে সাধারণত ৪% থেকে ৬% পর্যন্ত অ্যালকোহল থাকে।