আর এই ইঁদুর দৌড়ে সামিল থাকার জন্য রেস্তোরাঁগুলিও চেষ্টার কসুর করে না। চমৎকার গ্রাহক পরিষেবা দেওয়া রেস্তোরাঁ মালিকদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর উপরই নির্ভর করে সমগ্র ব্যবসা। আজকাল অনেক রেস্তোরাঁর তরফেই এমন কিছু চমক দিতে দেখা যায় যা প্রায় অতিমানবিক কাজকর্মের সামিল। এ সব পদ্ধতির আসল উদ্দেশ্য হল গ্রাহককে আকৃষ্ট করা। অনেক সময়ই রেস্তোরাঁর কর্মীরা এমন কিছু আশ্চর্যজনক কাজ করে ফেলেন যা আদতে মানুষের পক্ষে সম্ভব নয় বলেই মনে হতে পারে।
advertisement
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এমনই এক কর্মকাণ্ডের ভিডিও। কোনও এক রেস্তোরাঁয় একজন ওয়েটারের (Waiter) এমন কাণ্ড করেছেন যে তাজ্জব সে দিনের গ্রাহক থেকে শুরু করে তামাম নেটদুনিয়া। ভাইরাল হওয়া ভিডিওয় দেখা যায় সদ্য যুবক ওই রেস্তোরাঁ কর্মী রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে খাবার ঘর (Dining Hall) পেরিয়ে খোলা জায়গা (Lawn) ছাড়িয়ে নেমে যাচ্ছেন সিঁড়ি দিয়ে। সেখানে আরও একটি খোলা খাবার জায়গা। আর এ সবই তিনি করছেন হাতে প্রায় এক ডজন (Dozen) খাবারের থালা নিয়ে। শুধু তাই নয়, ডান হাতে খাবারের থালাগুলি ধরে বাঁ হাতে তিনি বয়ে নিয়ে যান একটি ভাঁজ করা টেবিলও।
আরও পড়ুন : অন্নসংস্থানের জন্য লোকাল ট্রেনে হকারি সম্ভ্রান্ত প্রবীণার, মন ছুঁয়ে যায় ভিডিও
দেখে মনে হতে পারে বড় অনায়াসে খাবার পৌঁছে দিলেন তিনি। একবারে বারো জনকে, একা। ভিডিওটি ট্যুইটারে (Twitter) শেয়ার হওয়ার পর বহু মানুষ দেখে ফেলেছেন। ভিডিওটি শুরু হয় রেস্তোরাঁর রান্না ঘরে। সেখানে ভাঁজ করা টেবিলের উপর প্রথমে একটি ট্রে-তে (Tray) আসাধারণ কায়দায় সাজানো হয় ডজনখানেক খাবারের থালা।
প্রত্যেকটিই খাবার পূর্ণ। তারপর জোরে নিঃশ্বাস নিয়ে ওই রেস্তোরাঁকর্মী নিজের ডান কাঁধে তুলে নেন ট্রে। বাঁ হাতে ভাঁজ করে নেন টেবিলটি। শুরু হয় দৌড়। যদিও তাঁর সঙ্গে ছিলেন এক সাহায্যকারী। তিনিই রান্নাঘরের বন্ধ দরজার একটি পাল্লা খুলে দেন। সন্তর্পণে এই এক ফালি দরজা দিয়ে খাবার বের করেন যুবক। তারপর খোলা আকাশের নীচে আবার নিজেই ভাঁজ করা টেবিল খোলেন তিনি। তার উপরেই নামিয়ে দেন খাবারের থালা-সহ ট্রে-টি। নামানোর সময়ই খানিকটা সাহায্য করেন তাঁর সহকারী।
আরও পড়ুন : কী ভাবে যৌন সঙ্গম হয়ে ওঠে সবথেকে মনোরম ও উপভোগ্য, জানুন আয়ুর্বেদের মত
ইতিমধ্যে এই রুদ্ধশ্বাস ভিডিওটি প্রায় চার মিলিয়ন মানুষ দেখে ফেলেছেন। প্রত্যেকেই হতবাক। যিনি পোস্টটি শেয়ার করেছেন তিনি লিখেছেন, "এই যুবককে আমি কিছু বখশিস দিতে চাই। তবে আমার চিন্তা হচ্ছিল যে সেই বকশিসে থালা-ই কিনতে হবে কি না।" অন্য সমস্ত ভাইরাল ভিডিওর মতোই এই ভিডিওতে নেট দুনিয়া দ্বিধাবিভক্ত। এক দল শুধুই মজা নিয়েছেন, প্রশংসা করেছেন ওই যুবকের দক্ষতার। একদল দেখেছেন বিপদের দিকটি।
অনেকেই মন্তব্য করেছেন, ভাইরাল হওয়া এই ভিডিওর জেরে রেস্তোরাঁ মালিকের প্রচুর লাভ হয়েছে নিশ্চয়ই, তার ভাগ পাওয়া উচিত এই ওয়েটারের।
আবার অনেক নেটিজেন রেস্তোরাঁকর্মী যুবকের এই স্টান্টটির (Stant) সমালোচনাও করেছেন। তাঁদের দাবি, এ সব করার কোনও দরকার ছিল না। দু’জন মানুষ খাবারের থালাগুলি আনতেই পারতেন। অথবা, আরও দু’বারে পৌঁছে দেওয়া যেত সেগুলি গ্রাহকের কাছে।
এক জন ট্যুইটার ব্যবহারকারী সরাসরি লিখেছেন, ‘এ সব করার কোনও দরকার ছিল না। একবারে ৩-৪টি প্লেট নিয়ে এসে গ্রাহককে দিলেই মিটে যেত! সেটা অনেক সহজ হত, কোনও দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও থাকত না। এ ভাবে কাকে প্রভাবিত করতে চাইলেন ওয়েটার কে জানে!’
অনেক নেটিজেন আবার রেস্তোরাঁর পরিচ্ছন্নতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের দাবি, এই কেরামতি দেখাতে গিয়ে, গ্রাহককে আকৃষ্ট করতে গিয়ে আদতে গ্রাহক পরিষেবা নষ্ট করাই হচ্ছে। এ ভাবে একটি থালার উপর আর একটি থালা চাপিয়ে নিয়ে যাওয়ায় ভিতরে থাকা খাবারগুলি নষ্ট হয়েছে হয় তো।
আবার একজন লিখেছেন, ‘কী হবে এত শক্তিক্ষয় করে, এ জন্য তো এক টাকাও বেশি দেবে না মালিক।’