বাগালকোট জেলার ইলাকাল তালুকের গুদুরের কাছে এসসি গ্রামের বাসিন্দা নিঙ্গাইয়া ওয়াদেয়ার। শহরের স্বনামধন্য বিএলডিই ইনস্টিটিউটের নার্সিং কলেজে অনুষ্ঠিত ইগনু (ইন্দিরা গান্ধি ন্যাশনাল ওপেন ইউনিভার্সিটি) পরীক্ষায় এমএ ইংরাজি শেষ বর্ষের পরীক্ষায় বসেছেন তিনি। এভাবেই সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ওই বৃদ্ধ। আর মজার বিষয় হচ্ছে, এই নিয়ে পঞ্চম স্নাতকোত্তর স্তরের পরীক্ষায় বসেছেন তিনি।
advertisement
এর আগে অন্যান্য বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছেন। ফলে পড়াশোনার প্রতি বৃদ্ধের আগ্রহ, ইচ্ছাশক্তি এবং অধ্যবসায় দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছেন সকলে।
নিঙ্গাইয়ার দুই ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছেন। আর নাতি-নাতনি রয়েছে ৫ জন। ছেলে-মেয়েরা প্রত্যেকেই নিজ নিজ ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত। মেয়ে পিএইচডি করেছেন। ছেলেরা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। বৃদ্ধ নিঙ্গাইয়া নিজেও এক জন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী। আসলে কর্মজীবন থেকে অবসর গ্রহণের পরেই শেখার ইচ্ছেটা আরও চাগাড় দিয়ে উঠেছিল তাঁর মধ্যে। আরও পড়াশোনা করার ইচ্ছা থাকার কারণে কন্নড়, হিন্দি এবং ইংরাজি ভাষা নিয়ে কর্ণাটক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর স্তরের পঠনপাঠন শুরু করেন। ইতিমধ্যেই এই বিষয়গুলির উপর স্নাতকোত্তর ডিগ্রিও অর্জন করে ফেলেছেন তিনি। এর পাশাপাশি ইগনু থেকে সমাজবিজ্ঞান বিষয়েও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছেন নিঙ্গাইয়া। এর পরেও ছিল আরও পড়াশোনা করার খিদে।
তবে বাবার এহেন পড়াশোনার প্রতি আগ্রহের পিছনে বাধা হয়ে দাঁড়াননি ছেলেমেয়েরাও। তাঁরাও উৎসাহ দিয়েছেন বৃদ্ধ নিঙ্গাইয়াকে। এই সাফল্যের কৃতিত্ব অবশ্য তিনি দিয়েছেন নিজের স্ত্রীকেই। ইগনু স্টাডি সেন্টারের তরফেও বৃদ্ধের প্রশংসা করা হয়েছে। জানানো হয়েছে যে, এভাবে অন্যান্য ছাত্রছাত্রীদেরও অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছেন নিঙ্গাইয়া। ইগনু-র আঞ্চলিক পরিচালক ড. এ. ভারদারাজা, সহকারী পরিচালক ড. বি এন দেবেন্দ্র, বিএলডিই নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ ড. শালমন চোপাডে, ইগনু-র কো-অর্ডিনেটর ড. সতীশ নাদাগাদ্দিও নিঙ্গাইয়ার সাফল্যের জন্য যারপরনাই উচ্ছ্বসিত। বৃদ্ধকে আরও উৎসাহ দিয়ে অভিনন্দনও জানিয়েছেন তাঁরা।
আজকের দিনে অনেক সময়ই নানা কারণে স্কুল কিংবা পড়াশোনা ছেড়ে দেয় অনেক তরুণ। অনেক সময় তাঁদের মধ্যে শেখার আগ্রহের অভাবও দেখা যায়। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে নিঙ্গাইয়ার এহেন কৃতিত্ব সত্যিই প্রশংসনীয়!