কমেডি অভিনেতা হিসেবেই পরিচিত সত্যান। কিন্তু তামিল সিনে জগতে প্রথমে তিনি নায়ক হিসেবেই ডেবিউ করেছিলেন। ২০০০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ইলাইয়ারাজা পরিচালিত ‘ইলাইয়াভান’ ছবিতে প্রথমবার মুখ্য ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল অভিনেতাকে। ‘কন্না উন্নাই থেড়ুকিরেন’ ছবিতেও নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। যদিও এই দু’টি ছবি প্রতীক্ষিত সাফল্য পায়নি। এরপর থেকেই ধীরে ধীরে পার্শ্বচরিত্র করতে শুরু করেন সত্যান।
advertisement
এরপর সেখান থেকে কমেডির দিকে ঝুঁকেছিলেন সত্যান। হামেশাই তাঁকে নায়কদের বন্ধুর চরিত্র করতে দেখা যেত। ৭০টি ছবিতে অভিনয় করা সত্ত্বেও ‘ননবন’, ‘থুপ্পাক্কি’ এবং ‘নবীনা সরস্বতী সবাথম’-এর মতো ছবিতে অভিনয় করে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছিলেন তিনি। বিজয়ের ‘ননবন’ এবং ‘থুপ্পাক্কি’ তো দর্শকদের মনে বিশেষ স্থান লাভ করেছিলেন। আর আজ তামিল ছবির দুনিয়ার প্রথম সারির কমেডিয়ান হয়ে উঠেছেন তিনি।
সত্যানের বাবা অনেক জমির মালিক। কোয়েম্বাত্তূর জেলার নামকরা শহরতলি হল মাধমপাত্তি। এখানকার রন্ধনশৈলী বিখ্যাত। সেখানকার মাধমপাত্তি শিবকুমারের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি। আর তাঁর একমাত্র পুত্র হলেন সত্যান। মাধমপাত্তিতে তাঁদের বাংলো পাঁচ একর জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। একসময় তাঁদের কয়েকশো একর জুড়ে বন এবং সম্পত্তি ছিল।
মাধমপাত্তি পরিবার এক সময় তাঁদের সম্পত্তির জন্য পরিচিত ছিল। তবে তাঁদের সব সম্পত্তি বিক্রি করে দিতে হয়েছে। যদিও মাধমপাত্তি শিবকুমার ছিলেন সিনেমার পৃষ্ঠপোষক। মার্কন্ডেয়ন শিবকুমার এবং সত্যারাজের মতো বিখ্যাত তামিল অভিনেতাদের সঙ্গে তাঁদের পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। সত্যারাজ যখন ছবির দুনিয়ায় পা রাখেন, তখন পরিবারের থেকে জুটেছিল তীব্র বিরোধিতা। সেই সময় শুধুমাত্র পাশে ছিলেন মাধমপাত্তি শিবকুমার। এমনকী, সত্যারাজকে প্রথম দিকে আর্থিক সাহায্যও করেছিলেন তিনি।
পরে মাধমপাত্তি শিবকুমার ছবির প্রযোজনার উদ্যোগ নেন। যার জেরে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন তিনি। ধীরে ধীরে তাঁদের নিজেদের সম্পত্তি বিক্রি করতে শুরু করেন তাঁরা। এক সময় এসে মাধমপাত্তি শিবকুমার নিজের পুত্র সত্যানকে সিনেমায় নামানোর সিদ্ধান্ত নেন। ‘ইলাইয়াভান’ ছবি প্রযোজনা করেন। যদিও এই ছবিটি প্রত্যাশিত সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। ফলে চরম আর্থিক ক্ষতি হয় এবং নিজেদের সম্পত্তি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন।
মাধমপাত্তি শিবকুমারের মৃত্যুর পরে অভিনেতা সত্যান কয়েক বছর আগে নিজেদের মাধমপাত্তির বাংলোটি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন। এরপর চেন্নাইয়ে শিফট করে যান। এক সময় মাধমপাত্তি শহরের স্থানীয়রা সত্যানকে ভালবেসে ‘কুট্টি রাজা’ বলে ডাকতেন। কিন্তু সত্যানকে নিজের সমস্ত পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে দিতে হয়েছিল। ফলে এখন আর নিজের শহরে সেভাবে যান না তিনি।