সিকর, রাজস্থান: ধর্ম সম্পূর্ণতই আধ্যাত্মিক। মনের সঙ্গেই তার সংযোগ। কিন্তু, তীর্থযাত্রায় যাঁরা শামিল হন, তাঁরা এই মাটিরই মানুষ, শারীরিক কষ্ট সব সময়ে তাঁদের পক্ষে উপেক্ষা করা সহজ হয় না। পবিত্র ধামে যদি মানুষের সেই অসহায়তাকে যদি উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে বেছে নেন কেউ, তাঁকে নিন্দার মুখে পড়তেই হয়। রাজস্থানের খাটু শ্যাম থেকেও এবার সেরকমই এক ঘটনা ভাইরাল হল।
advertisement
LinkedIn-এ একটি পোস্ট সবার সঙ্গে শেয়ার করেছেন মেঘা উপাধ্যায়। সঙ্গে একটা বিলের ছবি দিয়েছেন তিনি। সেই বিল দেখে এবং ঘটনা জেনে শিউরে উঠেছে নেটদুনিয়া। কেন না, কয়েক মিনিটের টয়লেট ব্যবহারের জন্য সেই বিলে জিএসটি-সহ ৮০৫ টাকা নেওয়া হয়েছে।
মেঘা জানিয়েছেন যে তাঁর মা অনেক দিন ধরে খাটু শ্যামের শ্রীবিগ্রহ দর্শনের অভিলাষী ছিলেন। মায়ের ইচ্ছা পূরণের জন্য তাঁরা সপরিবারে সেই পবিত্র ধামে আসেন। সকাল ৬টায় হোটেল থেকে বেরিয়ে তাঁরা মন্দিরে পৌঁছে দর্শনের জন্য লাইন দেন। মায়ের বয়স হয়েছে, মেঘা ভিআইপি টিকিট কাটার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু মা রাজি হননি, ঈশ্বরের কাছে সবাই সমান, এই মূল সত্যে অটল থেকে লাইনে ঘণ্টা দুই দাঁড়িয়ে ছিলেন।
এর পর থেকেই আচমকা তাঁর শরীর খারাপ হতে শুরু করে। পেটে অসহ্য ব্যথা, সঙ্গে বমি ভাব। মেঘা ছিলেন মায়ের কাছে, তাঁর বাবা পাগলের মতো একটা পরিচ্ছন্ন টয়লেটের খোঁজ করতে থাকেন। তা সুলভ না হওয়ায় তাঁরা নিকটবর্তী শ্রীরাম প্যালেস হোটেলে যান। রিসেপশনিস্টকে অনুরোধ করা হয় একটা টয়লেট ব্যবহার করতে দেওয়ার।
রিসেপশনিস্ট মায়ের দিকে তাচ্ছিল্যের চোখে তাকিয়ে বললেন, টয়লেট ব্যবহার করতে হলে ৮০০ টাকা দিতে হবে। আমরা চমকে উঠি! কোনও সহানুভূতি নেই! একবার কথাটা বলার আগে ভাবলেনও না, লিখেছেন মেঘা।
মা টয়লেট থেকে বেরিয়ে আসার পর তাঁরা যখন বিল চান, ওই হোটেলকর্মী বলেছিলেন, ১০০ টাকা কম করে দেবেন যদি বিল না নেওয়া হয়। পরিবার চাইতে জিএসটি সমেত ৮০৫ টাকার একটা বিল হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়।
এখনও আমার ব্যাপারটা বোধগম্য হচ্ছে না। বয়স্ক এক মহিলাকে যন্ত্রণায় কাতরাতে দেখেও একজন কীভাবে মানবিকতার বদলে টাকা চাইতে পারে! এ কোন সমাজে পরিণত হচ্ছি আমরা, প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন মেঘা।
