সন্তু জানা উদ্ধার করেছিলেন বাংলা ওড়িশা সীমানা বাংলার দাঁতন থানার আঙ্গুয়া থেকে। তবে কীভাবে এল এই দুই মেডেল। তা অবশ্য অজানা সকলের কাছে। যাদের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে এই দুটো “চাকতি” তারা অবশ্য নিজেরাও জানেন না কীভাবে এল? সামান্য ধাতব বস্তু হিসেবে অবহেলায় ঘরের চালে গুঁজে রেখেছিলেন ঘরের লোকজন। তবে অবশ্য এ প্রশ্ন উঠছে দাঁতন থেকে তবে কী কেউ যোগ দিয়েছিলেন প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে?
advertisement
সে প্রায় ৮ থেকে ১০ বছর আগেকার কথা। সন্ত জানা পেশায় শিক্ষক, নেশা লোকসংস্কৃতি ইতিহাস গবেষণা। বিভিন্ন পুরানো জিনিসপত্রের সংগ্রহের নেশা তার। শুধু সংগ্রহ নয়, তার থেকে মর্মার্থ উদ্ধার করেন তিনি। সেভাবে একদিন ইতিহাস খুঁজতে খুঁজতে তিনি পৌঁছেছিলেন দাঁতন থানার আঙ্গুয়া গ্রামে। সেখানে বিশ্বজিৎ জানার মাটির বাড়ির খড়ের চালে গুঁজে রাখা দুটি মেডেল উদ্ধার করেন তিনি। যা দেখে তিনি নিজে বিস্মিত হয়েছিলেন। এদিকে অবশ্য বাড়ির লোক জানেই না তাদের পূর্বপুরুষ কেউ ব্রিটিশদের হয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে লড়েছেন কিনা? ইতিহাসটা কেটে জানা যায়, এই দুটি মেডেলের মধ্যে একটি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের এবং অপরটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্মারক হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। তবে কারা গিয়েছিলেন এই যুদ্ধে?
তবে সেই মেডেল উদ্ধার করে, গবেষকরা জানতে পেরেছেন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ হয়েছিল ১৯১৪-১৯১৮ পর্যন্ত। ইতিহাসবিদরা বলছেন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মেডেলটি ১৯১৯–এ দেওয়া হয়। যা তামার৷ যার একপিঠে রাজা পঞ্চম জর্জের মুখাবয়ব রয়েছে। সেখানে লেখা, ‘KING GEORGE V EMPEROR’। আর অপর পিঠে রয়েছে এক আহত ভারতীয় সৈনিকের ছবি। যাঁকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন আর একজন। সেখানে লেখা ‘FOR FREEDOM AND HONOUR’। এবং অন্যটিতে লেখা ‘1939-45’।মেডেলটির এক পিঠে রাজা ষষ্ঠ জর্জের মুখাবয়ব। সঙ্গে লেখা ‘GEORGE VI G:BR:OMN: REX ET INDIAE IMP:’। উল্টোপিঠে এক ব্রিটিশ সিংহ দ্বিমুখী ড্রাগনের উপরে আক্রমণরত অবস্থায় দাঁড়িয়ে।
এই দুটি ইতিহাস স্মারক নিজের সংগ্রহে রেখেছেন গবেষক সন্তু জানা। তবে এখনও কারা গিয়েছিলেন প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তা অজানা। গবেষকরা মনে করছেন যারা এই যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন, তারা জীবিত অবস্থায় বাড়ি না ফিরলেও তাদের বাড়িতে ব্রিটিশ শাসকেরা পাঠিয়েছিলেন এই স্মারক। যা তামার, সোনার কিংবা রূপোর তৈরি। তবে এই ইতিহাস সুপ্রাচীন। তার খোঁজ চালাচ্ছেন গবেষকেরা।
রঞ্জন চন্দ