মহারাজা গঙ্গা সিং কে ছিলেন
বিকানেরের মহারাজা গঙ্গা সিং ভগীরথের মর্যাদা পেয়েছেন। গঙ্গা সিংয়ের বাবা মহারাজা লাল সিং ছিলেন এই রাজ্যের ২০তম মহারাজা। তাঁর রাজত্বকাল ১৮৫১ থেকে ১৮৮৭ সাল পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। গঙ্গা সিং ১৮৮০ সালের ১৩ অক্টোবর মহারাজ সিংয়ের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। যখন মহারাজা লাল সিং মারা যান, তখন গঙ্গা সিংয়ের বয়স ছিল মাত্র ৮ বছর। এই অল্প বয়সেই, ১৮৮৮ সালে গঙ্গা সিং বিকানের রাজ্যের সিংহাসনে আরোহণ করেন।
advertisement
তিনি সিংহাসনে আরোহণের সঙ্গে সঙ্গেই দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়
১৮৯৯-১৯০০ সালের দুর্ভিক্ষে বিকানের রাজ্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এই সময়কালে তীব্র খরা এবং দুর্ভিক্ষ ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের সৃষ্টি করে। এই সময়ে, মহারাজা গঙ্গা সিং বিকানেরে জল আনার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করতে শুরু করেছিলেন।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর মর্যাদা বৃদ্ধি পায়
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়, মহারাজা গঙ্গা সিংও একজন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ হয়ে উঠেছিলেন। বিকানেরের গঙ্গা রিসালা (উটের উপর আরোহী সেনাবাহিনী) প্রথম বিশ্বযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল। ১৯১৯ সালের প্যারিস শান্তি সম্মেলনে গঙ্গা সিং ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। তিনি চেম্বার অফ প্রিন্সেসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যও ছিলেন।
গঙ্গা নগরের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৯২৭ সালে
মহারাজা গঙ্গা সিংয়ের প্রচেষ্টার পর, ১৯২৭ সালে বিকানেরের শুষ্ক অঞ্চলে সেচ সুবিধা শুরু হয়। এই খালটি মরুভূমিকে সবুজ মাঠে রূপান্তরিত করে। শুধু বিকানের নয়, রাজস্থানের অনেক অঞ্চল এর থেকে উপকৃত হয়েছে।
গ্যাং ক্যানেল কীভাবে মানুষের জীবন বদলে দিয়েছে
গ্যাং ক্যানেলের মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৪৪৫ কিলোমিটার। এই খালটি পঞ্জাবের ফিরোজপুর জেলার শতদ্রু নদীর হুসেইনিওয়ালা হেডওয়ার্কস থেকে শুরু হয়। এটি রাজস্থানের বিকানের, হনুমানগড় এবং শ্রীগঙ্গানগর জেলা পর্যন্ত বিস্তৃত। এর প্রধান অংশটি বিকানের রাজ্যে সেচের জন্য নির্মিত হয়েছিল, যা এই অঞ্চলকে সবুজ বিপ্লবের দিকে পরিচালিত করেছিল। এই খাল আসার পর অনেক শুষ্ক এলাকা এখন উর্বর হয়ে উঠেছে। এর ফলে স্থানীয়দের জীবনও বদলে গিয়েছে। আজও এই খালটি রাজস্থানের উত্তরাঞ্চলে সেচের প্রধান উৎস।
শিক্ষাক্ষেত্রেও বিপ্লবী সংস্কার আনা হয়েছিল
মহারাজা গঙ্গা সিং শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং প্রশাসনেও অনেক সংস্কার এনেছিলেন। তিনি বিকানেরে দুঙ্গার কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন, যা আজও একটি বিশিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তিনি হাসপাতাল, রেলপথ এবং সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাও সম্প্রসারণ করেছিলেন। ১৮৪৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ৬৩ বছর বয়সে তিনি মারা যান।