মহারাজগঞ্জ: সবাই জানেন যে বিয়েতে যৌতুক নেওয়া আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু তার পরেও আমাদের দেশে যৌতুক বিনিময় এবং সেই সূত্র ধরে কনের উপরে অত্যাচার, দুইয়ের কোনওটাই বন্ধ হয় না। শিক্ষিত মেয়েরাও যে পণপ্রথার ফাঁদে পড়ে শ্বাসরুদ্ধ হচ্ছেন, তারও নজির হামেশাই উঠে আসে সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে। এবার যেমন খবর এল উত্তর প্রদেশ থেকে।
advertisement
অনেক সাধ করে মা-বাবা তাঁদের মেয়ের বিয়ে দেন। সুপ্রতিষ্ঠিত পাত্র পেলে তাঁদের আহ্লাদের সীমা থাকে না। পাত্র যদি পেশায় ডাক্তার হয়, তাহলে তো কথাই নেই। অথচ, উত্তর প্রদেশের এই ঘটনা প্রমাণ করে দিচ্ছে যে শিক্ষিত মানুষও কতটা অমানবিক হতে পারে!
জানা গিয়েছে যে ঘটনাটি উত্তর প্রদেশের মহারাজগঞ্জ এলাকার। সেখানেই বিয়ের মাত্র দশ দিন পরে এক নববিবাহিতা মহিলা তাঁর ডাক্তার স্বামী-সহ তাঁর শ্বশুরবাড়ির সাতজনের বিরুদ্ধে যৌতুককে কেন্দ্র করে শারীরিক নির্যাতনের মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনাটি সদর কোতোয়ালি থানা এলাকার। পুলিশের কাছে দেওয়া অভিযোগে ওই মেয়ে তাঁর উপর হওয়া নির্যাতনের কথা বিশদে জানিয়েছেন। নববিবাহিতা ওই মহিলা পুলিশকে জানিয়েছেন যে, ১২ ফেব্রুয়ারি হিন্দু রীতি অনুসারে নিছলাউল থানা এলাকার চমনগঞ্জের কাছে বসবাসকারী ডা. রত্নেশ গুপ্তের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়।
ডাক্তার স্বামী পেয়ে বেশ আনন্দিত ছিলেন তিনি। বিয়ের পর সুখেই তাঁর শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছেছিলেন, কিন্তু সেখানে তাঁকে যৌতুকের জন্য হেনস্থা করা হয়েছিল এবং প্রচণ্ড মারধর করা হয়েছিল। বাবা-মা পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি। এরপর ১৯ ফেব্রুয়ারি নববিবাহিতা ওই কনে তাঁর স্বামীর সঙ্গে হানিমুনের জন্য গোয়া যান। নববিবাহিত মহিলার অভিযোগ, সেখানেও তাঁর স্বামী মধ্যরাতে ঘরের ভিতরে তাঁকে মারধর করেন। শুধু তাই নয়, মহিলা অভিযোগ করেছেন যে তাঁর স্বামী তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টাও করেছিলেন।
ঘটনাটি জানার পর, মেয়ের বাবা-মা সঙ্গে সঙ্গে একটি ফ্লাইট বুক করেন এবং ২২ ফেব্রুয়ারি মেয়েকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। বাড়িতে পৌঁছনোর পর ওই মহিলা সদর কোতোয়ালিতে অভিযোগ দায়ের করেন- তাঁর স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন তিনি। পুলিশ সুপার সোমেন্দ্র মীনা জানিয়েছেন, নববিবাহিত মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে মারধর, যৌতুকের জন্য নির্যাতন-সহ বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে এবং প্রমাণের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
