আসলে এই মুহূর্তে মা বৈষ্ণো দেবীর দর্শনে আগত হাজার হাজার দর্শনার্থী কাটরায় আটকে পড়েছেন। এদিকে এখন তাঁদের হাতে খাওয়ার টাকা পর্যন্ত নেই। এমনকী, হাড়কাঁপানো এই ঠান্ডায় মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও জোগাড় করার ক্ষমতা এখন তাঁদের নেই। এখানেই শেষ নয়, মোবাইলের সিগনালও নেই। যার জেরে এই সমস্যার কথা তাঁরা জানাতে পারছেন না প্রিয়জনেদের কাছেও।
advertisement
আর এর প্রধান কারণ হল ভারতীয় রেলওয়ে। আসলে ৮ থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত কাটরা যাতায়াতকারী প্রায় সমস্ত ট্রেনই বাতিল করা হয়েছে। এদিকে ট্রেন চলাচল কবে শুরু হবে, সেটা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। আর এই সময়ের মধ্যে ট্রেন ধরার জন্য সপরিবার রেল স্টেশনে পৌঁছেছিলেন দর্শনার্থীরা। সেখান থেকেই ট্রেন বাতিল হওয়ার খবর পেয়েছেন তাঁরা।
সমস্ত ট্রেন বাতিল আর মোবাইলও স্যুইচড অফ:
যদিও ট্রেন বাতিল হওয়ার বার্তা যাত্রীদের কাছে মেসেজের মাধ্যমে পৌঁছে দিয়েছিল ভারতীয় রেলওয়ে। কিন্তু জম্মু এবং কাশ্মীরে প্রি-পেড সিম বন্ধ থাকায় তা দর্শনার্থীদের কাছে পৌঁছয়নি। জম্মু থেকে ট্রেন ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পুণ্যার্থীরা। কিন্তু সেখানে গিয়ে ট্রেন বাতিল হওয়ার খবর পান। আর যে ট্রেনগুলি এই মুহূর্তে চলছে, সেগুলিতে তিলধারণের জায়গা পর্যন্ত নেই।
তবে জানা গিয়েছে যে, পাঠানকোটের আগে কোনও ট্রেন পাওয়া যাবে না। এই পরিস্থিতিতে পরিবার নিয়ে পাঠানকোট পৌঁছে সেখান থেকে পরবর্তী ট্রেন ধরা সহজ নয়। ইতিমধ্যে আবার নয়া এক সমস্যার উদ্রেক হয়েছে তাঁদের জন্য, যাঁরা পরবর্তী বন্দোবস্ত না হওয়া পর্যন্ত হোটেলে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আকাশছোঁয়া দাম হোটেল রুমের:
সমস্ত হোটেলেই ভর্তি। তাই বুকিং নিতে অস্বীকার করছে তারা। অন্যদিকে, যেসব হোটেলে ঘর খালি রয়েছে, তারা নিজেদের ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দর্শনার্থীদের পকেটের অবস্থা তথৈবচ। ফলে সঙ্কটের জোড়া ফলায় তাঁরা কোনও ভাবে কাটরা ছেড়ে বেরোতে চাইছেন। ফলে টেম্পো ট্রাভেলারের সন্ধান করছেন।
আবার আচমকা চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় টেম্পো ট্রাভেলারও অমিল। কিছু হোটেল আবার পাঠানকোট, জলন্ধর ও অমৃতসর থেকে টেম্পো ট্রাভেলার ডেকে পাঠাচ্ছে। এক্ষেত্রেও প্রচুর টাকা দাবি করছেন চালকরা। কাটরা থেকে দিল্লি আসার জন্য ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা দাবি করছেন তাঁরা।
দর্শনার্থীদের অবস্থা শোচনীয়:
দর্শনার্থীদের পরিস্থিতি বুঝছেন না কেউই, কিংবা দামও কমাচ্ছেন না। কাটরা ছেড়ে বেরোনোর জন্য টেম্পো ট্রাভেলারদের অন্যায্য দাবি মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছেন পুণ্যার্থীরা। আর যাঁদের ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার সামর্থ্য নেই, তাঁরা পরিস্থিতির কাছে নতিস্বীকার করছেন। আর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন। তবে কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, সেই উত্তর একমাত্র দিতে পারে ভারতীয় রেলওয়ে।