খান্ডোয়া রেলওয়ে স্টেশন শহর থেকে কিছুটা দূরে। করোনার আগে এই স্টেশন ট্রেনের শব্দে মুখরিত হয়ে থাকলেও আজ তা শুনশান। এখন ট্রেন আসে না, হুইসেল বাজে না, বাচ্চাদের দুষ্টুমি দেখা যায় না, নেই হকারদের হাঁকডাক। বেঞ্চে বসে খবরের কাগজ পড়েন না কেউ। ৬ বছরে এখানে একটিও ট্রেন থামেনি। স্থানীয়রা বলছেন, রেলওয়ে মনে হয় এই স্টেশনের কথা ভুলে গিয়েছে। নইলে করোনার লকডাউনের পর সব খুলে গেল, এই স্টেশন আজও একেবারে বন্ধই পড়ে রইল। কিন্তু কী কারণ, উত্তর জানে না কেউ।
advertisement
আরও পড়ুনঃ পেটে গেলেই কুরে কুরে খায় ‘এঁদের’ লিভার! আজই করলা-উচ্ছে খাওয়া বন্ধ করা উচিৎ কাদের? নচেৎ শরীরের দফারফা
তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে করোনা মহামারির আগে ৫১১৫৮, ৫১১৮৮, ৫১১৮৭ ও ৫১১৫৭ নম্বর ট্রেন কোহদাদ স্টেশনে থামত। প্ল্যাটফর্মে কৃষকরা তাদের ফসল শহরে নিয়ে যেত, ছাত্ররা স্কুল-কলেজের উদ্দেশ্যে রওনা দিত, চাকুরিজীবীরা যাত্রা শুরু করত। আশপাশের সমস্ত গ্রামের মানুষ এই স্টেশনের উপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু এখন তা জনশূন্য।
কেন বন্ধ হল স্টেশন? রেলের যুক্তি, যাত্রী সংখ্যা কম এবং লোকসানে চলার জন্য এই স্টেশন চালু করা যায়নি। এখান থেকে ট্রেনের স্টপেজ তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু রেলওয়ের পরিসংখ্যানের বাইরেও রয়েছে গ্রামের চাহিদা, প্রবীণদের অসহায়ত্ব, কৃষকদের সমস্যা এবং ছাত্রদের সংগ্রাম। মানুষের এখনো এই স্টেশন দরকার। স্থানীয়দের দাবি, প্রতিদিন স্টপেজে অন্তত একটি বা দুটি যাত্রীবাহী ট্রেন এখানে যেন থামে, যাতে গ্রামের আনুষঙ্গিক চাহিদা মেটানো যায়।
স্থানীয়দের দাবি, এই স্টেশনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল একসময়। টাকলিকালা গ্রামের বাসিন্দা জয়দীপ কুশওয়াহা বলেন, “কোহাদাদ স্টেশন অনেক পুরনো। ১৯৬০-৬১ সালে যখন জলের জন্য হাহাকার শুরু হয়েছিল, তখন কোহরাদ স্টেশনই রেলকে জীবনদায়ী জল দিয়েছিল। নিকটবর্তী সাকাটা নদী থেকে জল ভরা হয় এবং খান্ডোয়া স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই সময়, ট্রেন কয়লা দিয়ে চালানো হত এবং কোহাদাদ স্টেশন তাদের অবলম্বন হয়ে ওঠে।” বর্তমানে সেই স্টেশনই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে। কাটনি-ভুসাওয়াল যাত্রী এখানে থামতেন, এখন তা এক্সপ্রেসে রূপান্তরিত হয়েছে। অন্য কোনও যাত্রীবাহী ট্রেনও এখানে থামে না। ফলে গ্রামবাসীরা অটো, বাস এবং ব্যক্তিগত যানবাহন ব্যবহার করে আশেপাশের প্রধান স্টেশনগুলিতে পৌঁছন।