ঝুনঝুনুর সাইবার পুলিশ স্টেশনে মামলা দায়ের করেছেন ওই মহিলা। তিনি জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের অক্টোবরে তাঁর কাছে একটি ফোন আসে। বলা হয়, ‘‘আপনার আধার কার্ড দিয়ে আরও একটি নম্বর চালু রয়েছে। সেই নম্বর থেকে আপনি বিভিন্ন লোককে বেআইনি বিজ্ঞাপন আর ভুয়ো মেসেজ পাঠাচ্ছেন। তাই মুম্বই পুলিশ আপনার বিরুদ্ধে আইপিসি-র ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।’’
advertisement
মহিলার তো আত্মারাম খাঁচাছাড়া হওয়ার জোগাড়। কিছুক্ষণের মধ্যে আরও একটা ফোন আসে মহিলার কাছে। সেখানে মুম্বই পুলিশের এসআই দাবি করা এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘ক্রাইম ব্রাঞ্চ থেকে বলছি। এখনই স্কাইপে অনলাইনে আসুন।’’ ভয়ে ভয়ে তাই করেন ওই মহিলা। স্কাইপে তাঁকে বলা হয়, ‘‘একটা মানি লন্ডারিং মামলায় ২০ লাখ টাকার লেনদেনে আপনার নাম পাওয়া গিয়েছে। বিষয়টা ইডি তদন্ত করে দেখবে।’’ এরপর মহিলাকে বিভিন্ন ভাবে ভয় দেখায় ওই ব্যক্তি। ২০২৩-এর অক্টোবর থেকে ২০২৪-এর ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত মহিলার কাছ থেকে দফায় দফায় হাতিয়ে নেয় মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।
ভয়ে টুঁ শব্দ করেননি ওই মহিলা। দিনের পর দিন প্রতারকের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে গিয়েছেন। গ্রেফতারির ভয়ে তিনি এতটাই ভীত ছিলেন যে সারা জীবনের সঞ্চয় প্রতারকদের হাতে দেন, ব্যাঙ্ক থেকে ৮০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে সেটাও তাদের হাতে তুলে দেন। প্রতারকরা তাঁকে বলেছিল, সুপ্রিম কোর্টে মানি লন্ডারিং মামলার নিষ্পত্তি এবং ডিজিটাল ভেরিফিকেশন হওয়ার পর সব টাকা ফেরত দেওয়া হবে। মোট ৪২ বার লেনদেন হয় বলে জানা গিয়েছে।
প্রতারকরা টাকা ফেরতের ডেটলাইনও দিয়েছিল। বলেছিল, ‘‘১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব টাকা আপনার অ্যাকাউন্টে ফেরত চলে যাবে।’’ কিন্তু ১৫ ফেব্রুয়ারি কেটে যাওয়ার পরেও তাঁর সঙ্গে কেউ যোগাযোগ না করায় ভয় পেয়ে যান মহিলা। বন্ধু-বান্ধবদের পুরো ঘটনা খুলে বলেন। তাঁরাই মহিলাকে এফআইআর করার পরামর্শ দেন। ঝুনঝুনু সাইবার স্টেশনের ইনচার্জ ডিএসপি হরিরাম সোনি জানিয়েছেন, পুলিশ মামলা নথিভুক্ত করে তদন্ত শুরু করেছে। মুম্বইয়ের বাসিন্দা সন্দীপ রাও, আকাশ কুলহারি এবং আরও একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে।