গাজিয়াবাদ: গত মঙ্গলবার আচমকাই উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদের হিন্ডন বায়ুসেনা ঘাঁটিতে নেমে এল একটি বিদেশি বিমান। আর সেই বিমান থেকে একে একে বেরিয়ে এলেন প্রায় ৫৩ জন । আর আচমকা বিমান থেকে এত সংখ্যক মানুষকে নেমে আসতে দেখে এক ব্যক্তি আতঙ্কিত হয়ে পুলিশকে খবর দিয়েছিলেন। উত্তর প্রদেশের পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিল। আর সেখানকার সেই দৃশ্য দেখে কার্যত চমকেও গিয়েছিল তারা। যখন বিমান থেকে নেমে আসা ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, তখন তাঁরা জানান যে, তাঁরা আদতে উত্তর প্রদেশেরই বাসিন্দা। নথিপত্র খতিয়ে দেখার সময় একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে।
advertisement
আসল ঘটনাটা ঠিক কী। আসলে উত্তর প্রদেশ এবং অন্যান্য রাজ্য থেকে প্রায় ৫৩ জন ভারতীয় মায়ানমারে সাইবার মাফিয়ার খপ্পরে পড়েছিল। তাঁদেরকেই মঙ্গলবার ফেরানো হয়েছে। ওই রাজ্যের ১৩টি জেলার ২১ জন যুবককে মঙ্গলবার গভীর রাতে লখনউয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তাঁদের নিজেদের জেলায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। লোকাল ইন্টেলিজেন্ট ইউনিট (এলআইইউ) এবং পুলিশ আধিকারিকেরা ওই যুবকদের জেরা করেছেন প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে। জেরায় ওই যুবকদের থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে এসেছে। জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ সকলকেই বাড়ি পাঠিয়েছে।
বড়সড় পদক্ষেপ গ্রহণ করে মায়ানমার থেকে প্রায় ৫৩০ জনকে গত ২ দিনে উদ্ধার করে ভারতে আনা হয়েছে। মঙ্গলবারও ৫৩ জনকে নিয়ে একটি বিমান উত্তরপ্রদেশের হিন্ডন বায়ুসেনা ঘাঁটিতে নেমেছে। এর মধ্যে ২১ জনকে বাসে চাপিয়ে লখনউয়ে আনা হয়েছিল। এঁরা সকলে প্রতাপগড়, গোরক্ষপুর, গোন্ডা এবং লখনউয়ের বাসিন্দা। তদন্তকারী সংস্থাগুলি এঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে। পুলিশি জেরায় তাঁরা জানান যে, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তাঁদের মায়ানমারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
পুলিশি জেরায় জানা গিয়েছে যে, ওই ভারতীয়দের পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করে তাঁদের বন্দি বানানো হয়েছিল এবং তাঁদের দিয়ে জোর করে প্রতারণা করানো হত। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁদের বাড়ি পাঠানোর আগে পুলিশ অবশ্য তাঁদের নাম, ঠিকানা, বাবার নাম, মোবাইল নম্বর এবং বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের সম্পর্কিত অন্যান্য আরও তথ্য নিয়ে রেখেছে। পুলিশের দাবি, এটা শুধু গ্যাং বা গোষ্ঠী নয়, বরং এরা একটি নেক্সাস। অভিযোগ, তারা শিক্ষিত ভারতীয় যুবকদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিদেশে নিয়ে যেত। তারপর তাঁদের আটকে রেখে জোর করে প্রতারণা করানো হত।