দিল্লির গ্রেটার কৈলাসের একটি বিলাসবহুল বাড়িতে থাকতেন অনিল কাটিয়াল। সেখান থেকেই তাঁকে এবং তাঁর সঙ্গী বিনোদ কাপুরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারির সময়ও নিজেকে ১৯৭৯ ব্যাচের মণিপুর ক্যাডারের আইপিএস বলে দাবি করেছিলেন অনিল। শুধু তাই নয়, গাজিয়াবাদের পুলিশ কমিশনার এবং ট্রান্স হিন্ডন ডিএসপি-এর কাছে সহযোগী বিনোদ কাপুরের নাম সুপারিশও করেন তিনি।
advertisement
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, শুধু দিল্লি এনসিআর নয়, অনিল কাটিয়ালের প্রতারণার ফাঁদ দুবাই পর্যন্ত ছড়ানো। পুলিশের অনুমান, এই তালিকা আরও দীর্ঘ হতে পারে। জানা গিয়েছে, সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ থেকে পড়াশোনা করেন অনিল। তারপর UPSC পরীক্ষায় বসেন। কিন্তু সফল হতে পারেননি। এরপর আমেরিকার ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করতে যান। দেশে ফিরে একটি বেসরকারি টেলিকম কোম্পানিতে যোগ দেন। কয়েক বছর আগে কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদ থেকে অবসর নিয়েছেন। তারপরই ফেঁদে বসেন প্রতারণার কারবার। নিজেকে অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার পরিচয় দিয়ে লোক ঠকাতেন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, বলবিন্দর সাহানি এবং তাঁর ছেলে সুমিত ১০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার প্রতারণা মামলায় সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে আটক হন। রাষ্ট্রদূতের কাছে নিজেকে বিদেশমন্ত্রীর সহপাঠী পরিচয় দিয়ে তাঁদের হয়ে সুপারিশ করেছেন অনিল কাটিয়াল। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, অনিলের বয়স ৬৯ বছর। তাই তাঁকে সেভাবে জেরা করা সম্ভব হয়নি। তবে তাঁর মোবাইল থেকে পাওয়া চ্যাটের ভিত্তিতে জানা গিয়েছে, প্রাক্তন আইপিএস পরিচয় দিয়ে তিনি দিল্লি ও গুরুগ্রামের উচ্চপদস্থ কর্তাদের কাছ থেকেও কাজ আদায় করেছিলেন।
অনিল কাটিয়ালের সহযোগী বিনোদ কাপুর দিল্লির একটি কনস্ট্রাকশন কোম্পানির মালিক। তাঁর কোম্পানি দিল্লি, পালাম, সরসাওয়া এয়ারপোর্ট এবং গোয়ালিয়র এয়ারবেসের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হ্যাঙ্গার, রানওয়ে এবং কমপাউন্ড ওয়াল তৈরি করেছে। পুলিশ জানিয়েছে,সম্প্রতি বিনোদ কাপুরের নামে ইন্দিরাপুরম থানায় প্রতারণার মামলা দায়ের হয়। এই মামলায় সুপারিশ করার জন্যই অনিল কাটিয়াল গাজিয়াবাদের পুলিশ কমিশনার এবং ট্রান্স হিন্ডন ডিসিপি-এর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। এখানেই শেষ নয়, অনিল কাটিয়ালের অভিযোগের ভিত্তিতে দুই পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ডও করা হয়েছিল। যদিও বর্তমানে পুলিশ এই সাসপেনশনগুলিকে সাধারণ ভুল হিসেবে উল্লেখ করছে।