প্রতি বছর ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিতে গণেশ চতুর্থী পালিত হয়ে থাকে। এই বছর পবিত্র তিথি পড়েছে বুধবার অর্থাৎ ৩১ অগাস্ট। এই দিনে নানা উপাচারে পূজিত হন গণপতি এবং তাঁর প্রিয় বাহন ইঁদুরও। নিবেদন করা হয় তাঁর অত্যন্ত পছন্দের মোদক। আর লাড্ডু তো থাকেই। শুধু তা-ই নয়, ভগবান গণেশের বিগ্রহকে খুব সুন্দর করে সাজানো হয় তাঁর প্রিয় রঙের জামা-কাপড় পরিয়েই। গণপতিকে সাজানোর পাশাপাশি আমরা নিজেরাও কিন্তু তাঁর প্রিয় রঙে সেজে উঠতেই পারি। তা-হলে আগে জেনে নেওয়া যাক, ভগবান গণেশের প্রিয় রঙগুলি কী কী। বলা হয়, গণপতির প্রিয় রঙের তালিকায় রয়েছে লাল, সবুজ এবং হলুদ।
advertisement
লাল টুকটুকে সাজ:
গণেশ ঠাকুরের অত্যন্ত পছন্দের রঙ লাল। তাই তাঁর পূজার বিশেষ দিনে লাল রঙের পোশাক পরাকে শুভ বলে গণ্য করা হয়। এই দিনে তাই মেয়েরা বেছে নিতে পারেন লাল রঙের শাড়ি। সুতি কিংবা সিল্ক হোক, পুজোর দিনে লাল শাড়ি তো মাস্ট হ্যাভ। আর যাঁরা শাড়িতে স্বচ্ছন্দ নন, তাঁরা লাল রঙের সালোয়ার স্যুট কিংবা এথনিক গাউন বেছে নিতে পারেন। আর পুরুষরা এই দিনে জিনসের সঙ্গে গলিয়ে নিতে পারেন লাল কুর্তা। কিংবা সাদা ধুতির সঙ্গেও পরে নিতে পারেন লাল পাঞ্জাবি। যাঁরা ক্যাজুয়াল পোশাকে স্বচ্ছন্দ, তাঁরা বেছে নিতে পারেন লাল শার্ট।
সবুজের পরশে ছড়িয়ে যাক স্নিগ্ধতা:
গণেশ ঠাকুরের পুজোয় দূর্বা ঘাস ব্যবহৃত হয়। দূর্বার সেই রঙটাই অত্যন্ত পছন্দ তাঁর। তাই এই দিনে মহিলারা এই রঙের জামাকাপড় বেছে নিতে পারেন। দূর্বা ঘাসের রঙ বা সবুজ রঙের শাড়ি পরা যেতে পারে। তা-ছাড়াও বেছে নেওয়া যেতে পারে সবুজ রঙের সালোয়ার স্যুট। আর পুরুষরা এই দিন সবুজ কুর্তা, অথবা সবুজ পাঞ্জাবি বেছে নিতে পারেন।
হলুদে যেন ঝলমলে রোদ্দুর:
গণেশ ঠাকুরের অন্যতম পছন্দের রঙ হল হলুদ। এই দিন উজ্জ্বল হলুদ রঙের ফুল অর্পণ করা হয় পার্বতী-নন্দনের চরণে। আর হলুদরঙা পোশাক তো বোধহয় প্রত্যেকের আলমারিতে একটা করে অন্তত থাকবেই। উজ্জ্বল হলুদ শাড়ি বা সালোয়ার স্যুট কিংবা লেহেঙ্গা পরে নিলেই উৎসবের সাজে ঝলমলে হয়ে ওঠা যাবে। আর চুলে যদি হলুদ গাঁদার মালা জড়িয়ে নেওয়া যায়, তা-হলে তো সোনায় সোহাগা। আর এ-দিন ছেলেরাও সেজে নিতে পারেন হলুদ-সাদার উজ্জ্বল কম্বিনেশনে।
এ-তো গেল পোশাক-আশাকের কথা। তবে এই দিনে ভিড়ের মধ্যে নজর কাড়তে সেজে ওঠাই যায় মহারাষ্ট্রের মহিলাদের মতো সাজে। বিশেষত তিন রঙের পৈঠানি শাড়ি, নওবরি শাড়ি কিংবা যে কোনও সিল্ক শাড়ি নিয়ে মহারাষ্ট্রীয় স্টাইলে সেজে নিতে পারি আমরা। সঙ্গে খোঁপায় ফুল এবং মরাঠি স্টাইল নথনি- আর কী চাই। রইল মহারাষ্ট্রীয় স্টাইলে শাড়ির (Marathi Style Saree) পরার সহজ উপায়।
নওবরি শাড়ি (Nauvari Saree) পরার সহজ উপায়:
এই ধরনের শাড়ি পরার জন্য টাইটস, লেগিংস কিংবা শর্টস পরে নিতে হবে। সায়া কিংবা পেটিকোট ব্যবহার করা চলবে না।
কোমরে শাড়ি জড়িয়ে সামনের দিকে এনে বাঁ-দিকের প্রান্তটা ডান দিকের কোণে শক্ত করে জোড়া গিঁট বাঁধতে হবে। মনে রাখতে হবে যে, শক্ত করে গিঁট বাঁধলেও শাড়ির বাঁধা অংশ যেন একেবারে আঁটোসাটো না-হয়ে থাকে। একটু ছাড় রাখতে হবে।
এ-বার বাকি শাড়ির অংশের থেকে আঁচলের প্রান্ত নিয়ে ছোট ছোট প্লিট করতে হবে। আঁচল যতটা লম্বা রাখা হবে, সেই অনুযায়ী প্লিটগুলিকে গুছিয়ে নিয়ে একটি সেফটি পিন আটকে নিতে হবে।
এর পর প্লিট করা আঁচলের অংশটাকে বাঁ-পাশ দিয়ে পিছন থেকে ঘুরিয়ে এনে বাঁ-কাধে ফেলে রাখতে হবে। এ-বার আঁচলের উপরের প্রান্তটা ঠিক করে কোমরের বাঁ-দিকে গুঁজে নিতে হবে।
দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে শাড়ির পিছন দিকের নিচের অংশটা সামনে এনে ওই জোড়া গিঁটের নিচ দিয়ে গুঁজে নিতে হবে।
এর পর সামনের দিকের বাকি অংশে কুচি করতে হবে। আর এখানে শাড়ির শেষ কুচি দিয়ে বাকি কুচিগুলিকে মুড়ে কোমরের ডান দিক বরাবর গুঁজে নিতে হবে।
এ-বার মাঝ বরাবর সমস্ত কুচি একসঙ্গে করে সেফটি পিন লাগিয়ে নিতে হবে। পা দু’টো ছড়িয়ে ডান দিকে কুচির এক-চতুর্থাংশ নিয়ে পায়ের ফাঁক দিয়ে ঘুরিয়ে পিছনের দিকে আনতে হবে।
তার পর ওই অংশের মাঝের অংশ খুঁজে নিয়ে কুচি করে কোমরের পিছনের অংশে আঁচলের উপর দিয়েই গুঁজে নিতে হবে।
সব শেষে আঁচলটাকে সুন্দর করে সাজিয়ে-গুছিয়ে ব্লাউজের সঙ্গে সেফটি পিন দিয়ে আটকে নিলেই একেবারে পারফেক্ট মরাঠি নওবরি সাজ!