প্রায়শই ‘দেহাতি ম্যাডাম’ হিসাবে পরিচিত যশোদা একজন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার, যিনি দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্তই পড়াশোনা করেছেন। বর্তমানে তাঁর নিজস্ব একটি ইউটিউব চ্যানেল আছে- ‘ইংলিশ উইথ দেহাতি ম্যাডাম’।
এই মূহূর্তে তাঁর চ্যানেলে ২.৮৫ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। তিনি গ্রামীণ মানুষদের ইংরেজি শেখান এবং কীভাবে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ইংরেজি বলা যায় তা বলেন।
আরও পড়ুন- টিয়াপাখি কীভাবে মানুষের মতো কথা বলতে পারে কখনও ভেবেছেন? এর কারণ জানলে চমকে যাবেন
advertisement
যশোদা জানিয়েছেন “এমন কিছু নেই যা একজন দেহাতি মানুষ করতে পারেন না। আজ শুধু গ্রামীণ মানুষই নয়, নানা মেট্রো শহর থেকে শুরু করে বিদেশের মানুষও আমার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছেন। আমি একজন দেহাতি এবং হ্যাঁ, আমি ইংরেজিতে কথা বলতে পারি। আপনি পারেন কি?”
গ্রামীণ পটভূমি থেকে একজন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার হয়ে ওঠার যাত্রা যশোদার জন্য সহজ ছিল না। তিনি একটি ঘটনার কথা স্মরণ করে জানান কেন তিনি ইংরেজি শিখতে শুরু করেন।
তিনি জানান, “আমি তখন একাদশ শ্রেণীতে ছিলাম। সেই সময় এক শিক্ষক আমায় দাঁড়িয়ে নিজের সম্পর্কে কিছু বলতে বলেন ইংরেজিতে। সেই সময় ইংরেজির কিছুই না জানায় আমাকে অপদস্হ হতে হয়। তখন থেকেই অন্য সহপাঠীরা আমাকে ‘দেহাতি’ বলে ডাকতে শুরু করে। আমরা সকলেই যখন স্বাধীন ভারতে থাকি এবং সমান আচার-অনুষ্ঠান পালন করি, সমান ভাবে দেশকে ভালবাসি, তখন পোশাক বা উচ্চারণের ভিত্তিতে কীভাবে একজন মানুষের মধ্যে সকলে পার্থক্য করে? আমি এই ঘটনার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েই ইংরেজি শেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’’
এরপর থেকেই তিনি ইংরেজিতে লেখা, পড়া, প্রায়শই রেডিওতে ইংরেজি খবর শোনা ইত্যাদি শুরু করেন।
আরও পড়ুন- কতটা পরিশ্রুত জল স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল? অতিরিক্ত বিশুদ্ধ জল কিন্তু ক্ষতি করে!
পরিবারের দরিদ্র আর্থিক অবস্থার কারণে, লোধি তাঁর উচ্চশিক্ষা চালিয়ে যেতে পারেননি। ২০১৯ সালে তিনি গাঁটছড়া বাঁধেন। যদিও তার পরিবারের সদস্যরা এই বিয়ের বিরুদ্ধে ছিলেন, তবে তিনি ভালবেসেই স্বামীর সঙ্গে থাকেন।
কিন্তু তাঁর স্বামী দিনমজুর শ্রমিক হওয়ায় খুবই কম উপার্জন করেন। পরে ২০২১ সালে প্রথম স্মার্টফোন কেনার পরই তিনি নিজের চ্যানেল করার কথা ভাবেন।
বর্তমানে তাঁর চ্যানেলে প্রায় ৩৬৮টি ভিডিও আপলোড করেছেন। তিনি কোনও প্রথাগত শিক্ষক নন এই কথা স্বীকার করার সময় তিনি বলেন যে তিনি অন্যদের ইংরেজি ভাষা শিখতে অনুপ্রাণিত করেন, ব্যস এইটুকুই তাঁর ইচ্ছা।
তাঁর অনুপ্রেরণামূলক ভিডিওতে, তিনি শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে চিন্তা করার জন্য অনুরোধ করেন, কারণ তিনি জানান ইংরেজি ভাষাতে ভাবতে শিখলে খুব শীঘ্রই এই ভাষা শিখতে পারা যায়।