এডওর্য়াস্ বাবর ক্ষীরপাই শহরের অনতিদূরে শ্যামদেবের কাছে বর্গীদের আটকে দেন। পরান আটা নামে জনৈক্য মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী ময়দা, দুধ, ঘি, মধু দিয়ে নতুন এক মিষ্টি তৈরি করে এডওয়ারস বাবরকে উপহার দেন। তারপর থেকেই এডওর্য়াস বাবরস্ এর নামানুসারে বাবরসা নামটি এসেছে। বাবরসার নামকরণের আরও একটি ভিন্নমত রয়েছে। এলাকার মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী মোঘল সম্রাট বাবরকে খুশি করতে বাবরের সেনাপতির হাতে গাওয়া ঘি ও ময়দা, দুধ, মধুর সংমিশ্রণ এক নতুন ধরনের মিষ্টি তৈরি করে বাবরকে উপহার হিসাবে পাঠান। খোদ বাবর এই মিষ্টি খেয়ে প্রশংসা করেন তার নাম অনুসারে বাবরসা নামটি এসেছে। বাবরসা মিষ্টি খেতে খুবই সুস্বাদু। সারা ভূ-ভারতে বাবরসা মিষ্টির কোনও বিকল্প নেই। বর্তমানে বাবরসা ক্ষীরপাই ছাড়িয়ে ভিন রাজ্য পাড়ি দিচ্ছে। ক্ষীরপাই পৌর এলাকার মিস্টান্ন ব্যবসায়ীরা বহু কষ্টে বংশপরম্পরায় এই মিষ্টিকে আজও টিকিয়ে রেখেছে। তারা দীর্ঘদিন দাবি করছিলেন বাবরসা মিষ্টান্নকে জিআই তকমার অন্তর্ভুক্ত করা হোক।
advertisement
আরও পড়ুন: বাবা রাজমিস্ত্রি, ছেলে বাঁকুড়ার গর্ব! ১৩ বছর বয়সেই যা করল, স্বপ্ন এখন অলিম্পিকের
দাবি উঠেছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের আপামর ক্ষীরপাই এর অধিবাসীদের পক্ষ থেকেও। সেই জিআই তকমাও পেয়েছে ক্ষীরপাইয়ের বাবরসা। ব্যবসায়ী থেকে কারিগর সকলেই জানাচ্ছেন, প্রতিদিনই এই প্রসিদ্ধ মিষ্টি তৈরি হয় চাহিদা বেশি তাই এই মিষ্টি তৈরির চাপও বেশি। প্রতি পিস বাবরসা ১০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে সঙ্গে মিষ্টির রস। মচমচে তেল ও ঘিয়ে ভাজা এই মিষ্টির স্বাদ নিতে দূরদূরান্তের মানুষ কিছুটা সময় দাঁড়ান ক্ষীরপাই শহরের হালদারদিঘি মোড়ে চন্দ্রকোনা-ঘাটাল রাজ্য সড়কে। হালদারদিঘি মোড়ে এই রাজ্য সড়কের ধারেই সারি সারি রয়েছে মিষ্টির দোকান, সেখানেই বংশপরম্পরায় চলে আসছে এই মিষ্টি তৈরি। বাসে বা এই রাজ্য সড়কে যাতায়াতের সময় হালদারদিঘি মোড়ে বাসস্টপে নেমেই হাতের কাছে ঐতিহ্যের মিষ্টি বাবরসার স্বাদ নেন দূরদূরান্তের যাত্রী বা পথচলতি মানুষ। ক্ষীরপাই ছাড়া এই মিষ্টি রাজ্যের অন্য কোথাও মিলে না তাই ক্ষীরপাইয়ের বাবরসা মিষ্টির নাম শুনলেও এই মিষ্টির স্বাদ নিতে অনেকেই পাড়ি দেয় ক্ষীরপাই শহরে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
রাজ্য ছাড়িয়ে দেশ বিদেশেও পাড়ি দিয়েছে এই বাবরসা। এক একটা বাবরসা তৈরি করতে চার থেকে পাঁচ মিনিট করে সময় লাগে, সারাদিনে বহু মিষ্টি তৈরি হয়। বর্তমানে বাবরসা তৈরির কারিগর সংখ্যা কমেছে, আগামী দিনে এই বাবরসা তৈরি নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগে ব্যবসায়ীরা।