শৈশবেই ভয়ঙ্কর রোগ Osteogenesis Imperfecta-এ আক্রান্ত হয়েছেন। ৫০ বারেরও বেশি হাড় ভেঙেছে, হয়েছে অসংখ্য অস্ত্রোপচার। একটানা ছয় বছর বিছানায় শুয়ে থাকতে হয়েছে। নাচ, গান, মঞ্চে ওঠার স্বপ্ন মুহূর্তেই থেমে যায়। এক সময় সূর্যের আলো দেখাও হয়ে উঠেছিল বিলাসিতা।
তবুও হাল ছাড়েননি সাই। বাঁ হাতের এক আঙুল দিয়ে কম্পিউটার চালানো শিখে নেন, সেখান থেকেই শুরু তাঁর নতুন লড়াই। গ্রাফিক ডিজাইন দিয়ে শুরু হওয়া সেই যাত্রা তাঁকে পৌঁছে দেয় আন্তর্জাতিক মঞ্চে। আজ তিনি একজন সফল গ্রাফিক ডিজাইনার, মোটিভেশনাল স্পিকার এবং সার্টিফায়েড হ্যাপিনেস কোচ।
advertisement
১৮টি বিশ্বরেকর্ড, রাষ্ট্রপতির হাত থেকে জাতীয় পুরস্কার এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের D-30 Disability Impact List-এ নাম—সবই তাঁর অধ্যবসায়ের ফসল। বিশ্বজুড়ে পরিচিত তিনি ‘Wheelchair Warrior’ নামে। শিলিগুড়িতে তাঁর শিকড়, বর্তমানে থাকেন বেঙ্গালুরুতে। শহরে ফিরলেই শুভাকাঙ্ক্ষীদের উচ্ছ্বাসে মুখর হয়ে ওঠে চারদিক। তবুও নিজেকে কখনও সেলিব্রিটি ভাবেন না। তাঁর মতে, ” আমি যদি এত কষ্টের মাঝেও হাসতে পারি, তাহলে সবাই পারবে।”
তাঁর প্রতিষ্ঠিত সংস্থা Happiness Unlimited আজ স্কুল, কলেজ, কর্পোরেট ও এনজিওতে পৌঁছে দিচ্ছে আনন্দ আর ইতিবাচকতার বার্তা। সাই বিশ্বাস করেন, অন্তর্ভুক্তি মানে শুধু র্যাম্প বানানো নয় বরং মানসিকতার পরিবর্তন। তাঁর কথাতেই মেলে জীবনের সারমর্ম—” যন্ত্রণা অনিবার্য, কিন্তু কষ্ট বেছে নেওয়া আমাদের হাতে।” ডঃ সাই কৌস্তুভ দাশগুপ্ত এক অনন্য প্রতীক—শারীরিক সীমাবদ্ধতা নয়, অদম্য মনোবলই মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যায়। তাঁর জীবন শেখায়, ”নিজেই আলো হও, তাহলেই পথ আলোকিত হবে।”