রাজ্যজুড়ে পুরভোট মানেই যেখানে প্রচারে বাধা, সন্ত্রাস, অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ শাসক-বিরোধীদের। সেখানে উলটপুরান মালদহের ইংরেজবাজার পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে। এখানে এখনও কেউ কাউকে প্রচারে বাধা দেননি। কেউ কারও বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানাননি। ছেঁড়া হয়নি কারও ফ্ল্যাগ, পোস্টার বা ফ্লেক্স। একই দেওয়ালে পাশাপাশি শোভা পাচ্ছে শাসক, বিরোধী, আর নির্দলের ভোট প্রচার। প্রচারের ফাঁকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের একসঙ্গে গল্প, আড্ডা, চায়ের ঠেক ও চলছে দিব্যি। এ সবের নেপথ্যে মালদহের অভিজাত ক্লাব 'মৈত্রী সংঘ'।
advertisement
আরও পড়ুন: ফের দুর্যোগের পূর্বাভাস! রাজ্যের 'এই' জেলাগুলিকে আগাম সতর্ক করল আবহাওয়া দফতর...
এ বার ইংরেজবাজার পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী সুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিজেপির সুরঞ্জিত দেব, কংগ্রেসের রঞ্জিত রায়, নির্দল প্রার্থী সজল সরকার- সকলেই একই ক্লাবের কর্মকর্তা বা সক্রিয় সদস্য। লড়াইয়ের ময়দানে কেউ কাউকে জমি ছাড়ছেন না। কিন্তু, বছরভর নিজেদের মধ্যে যে মৈত্রীর সম্পর্ক, শুধু ভোটে দাঁড়ানো নিয়ে তাতে চিড় ধরবে কেন? এই মৈত্রীর বন্ধনেই বিশ্বাসী প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। এই ওয়ার্ডে আরও দুই প্রার্থী সিপিএমের শুভাশিস সরকার আর নির্দল সনত দত্ত।
আরও পড়ুন: জন্মদিন বা বিবাহবার্ষিকী, উপহার হতেই পারে 'হুপ এমব্রয়ডারি', খুলছে নয়া আয়ের পথ
তবে,সব কিছুকে ছাপিয়ে ওয়ার্ড জুড়ে চলছে মৈত্রীর আলোচনা। ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর তথা তৃণমূল প্রার্থী সুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট বলছেন, সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাব। গণনার পরেও সবাই একসঙ্গেই পাড়ায় থাকব। হোক না প্রতিদ্বন্দ্বী। সকলেই তো আমার প্রতিবেশী। মালদহের এই ওয়ার্ডে পুরযুদ্ধে বিরোধীদের মুখেও মৈত্রীর সুর। বিজেপি প্রার্থী বলছেন, পোস্টার ছেঁড়া দূরের কথা বরং আমরা একে অন্যের খুলে যাওয়া পোস্টার ফের লাগিয়ে দিচ্ছি। হোক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী। কিন্তু, মন থেকে কোনও শত্রুতা নেই।
আরও পড়ুন: বাস্তু শাস্ত্র মেনে 'এই' ৫ উপহার দিন নিজের প্রিয়জনকে, পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধির জোয়ার আসবে
কংগ্রেস প্রার্থীর সাফ কথা, প্রার্থী করেছে আলাদা আলাদা দল। তা বলে নিজেরা বিবাদ করব কেন! আমরা ফের ক্লাবের দুর্গাপুজোতে একসঙ্গে অঞ্জলি দেব। আমাদের মধ্যে কে বেশি যোগ্য, তা ঠিক করবেন জনতা জনার্দন। এই ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ক্লাবের সদস্য সজল সরকার। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সম্পর্কে বলছেন, পরীক্ষায় কেউ প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, বা চতুর্থ হবেন, এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু, তাতে এই হৃদয়ের দূরত্ব কমবে না। গতবছর করোনাকালে এই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরাই একসঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে সমাজসেবায় যুক্ত হয়েছিলেন। দীর্ঘদিন এলাকার করোনা আক্রান্তদের খাবার, ওষুধ, অক্সিজেন জুগিয়েছিলেন। ক্লাবে মৈত্রীর বন্ধন সুদৃঢ়। রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব বা মারামারির প্রশ্নই ওঠে না। যাঁরা হারবেন তাঁদেরকেও সম্বর্ধনা দেবে ক্লাব। জানিয়েছেন ক্লাব সম্পাদক।
সেবক দেবশর্মা