অপহৃত তৃণমূল কর্মীর দেহ উদ্ধার মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে। কাতলামারি থেকে অপহৃত তৃণমল কর্মীর গলাকাটা দেহ উদ্ধার। বাড়ি থেকে প্রায় পাঁচশো মিটার দূরে মাখনার জলাশয় থেকে আব্দুল বারিক নামে তৃণমূল কর্মীর দেহ উদ্ধার। গত ১৪ মে বাড়ি থেকে তাঁকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছিল বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। এরপর থেকেই তাঁর খোঁজ মিলছিল না। তবে গলা কাটা দেহ উদ্ধার হলেও বিকেল পর্যন্ত মৃতের মাথার খোঁজ মেলেনি। কুপিয়ে ও গলা কেটে খুন বলে প্রাথমিক অনুমান পুলিশের।
advertisement
জানা গিয়েছে, এলাকা দখলকে ঘিরে কাতলামারি এলাকায় বাসির ও উনসাহাক গোষ্ঠীর বিবাদ দীর্ঘদিনের। দুই গোষ্ঠীই বর্তমানে শাসকদলের ছত্রছায়ায় রয়েছে। নিহত আব্দুল বারিক এক গোষ্ঠীর নেতা উনসাহাকের ভাইপো। তাঁকে অন্য গোষ্ঠীর মাথা বাসির ও তার দলবল অপহরণ করেছিল বলে অভিযোগ। এরপর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছিল বাসির। ঘটনার তদন্তে নেমে গতকাল নেপালে পালানোর সময় বাসিরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জেরায় খুনের কথা স্বীকার করার পর আজ তাকে মালদহে আনা হয়। বেলার দিকে বাসিরের ছেলে সাদ্দামকে সঙ্গে নিয়ে জলাশয়ে তল্লাশিতে যায় পুলিশ।
আরও পড়ুন: বাংলার তিন জেলায় আসছে প্রবল ঝড়বৃষ্টি! জেনে নিন সময় ও সতর্কতা সম্পর্কিত পূর্বাভাস
সাদ্দামই জলাশয়ে বারিকের দেহ খুন করে ফেলে দেওয়া হয়েছিল বলে দেখিয়ে দেয়। বারিকের গলা কাটা ছিল। তার পেটে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। তবে দেহ মিললেও মাথার হদিশ এখনও মেলেনি। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিযেছে, কাতলামারির বাসির ও উনসাহাক গোষ্ঠীর বিবাদ তিন দশকেরও পুরনো। এলাকা দখলকে ঘিরে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষ ও গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত ১৪ মে রাতে বাসির দলবল নিয়ে উনসাহাকের ভাইপো আব্দুল বারিকের বাড়িতে চড়াও হয়ে তাকে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। বাঁধা দেওয়ায় তাঁর স্ত্রী সায়েমা বিবিকেও বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তারপর থেকে এতদিন বারিকের খোঁজে তল্লাশি চালালেও তার হদিশ মেলেনি।
আরও পড়ুন: পেঁপের জন্য চলে গেল প্রাণ! ক্যানিংয়ের ঘটনা আপনাকে স্তম্ভিত করে দেবে
এই খুনের ঘটনায় তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। পাল্টা সাফাই দিয়েছেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। যা নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপির চাপানউতোর। নিহতের ভাই সাহেবজান বলেন, বাসির চায় ও একাই এলাকায় রাজত্ব করবে। আমরা বাঁধা দেওয়ায় একাধিকবার আমাদের উপরে গুলি চালানো হয়েছে। আমাকেও একবার গুলি করা হয়েছিল। কোনও রকমে প্রাণে বেঁচেছি। নিহতের স্ত্রী সায়েমা বলেন, স্বামীকে তো আর ফেরত পাব না। তবে অভিযুক্তদের যেন ফাঁসি হয় এটাই চাই।
হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি হজরত আলি অবশ্য বলেন, ওরা দুপক্ষই তৃণমূল করে। তবে এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতি নেই। এটা বাসির ও উনসাহাক দুপক্ষের পুরনো বিবাদ। আইন আইনের পথেই চলবে।’’
বিজেপির জেলা সম্পাদক কিসান কেডিয়া বলেন, ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে তৃণমূলের বিবাদেই এ ধরণের ঘটনা ঘটেছে।