জলপাইগুড়ির বড়োদেঘি চা বাগানের কাঁচা পথে প্রতিদিন ভোরে দেখা যায় এক তরুণীকে, স্টিয়ারিং হাতে টোটো চালিয়ে ছুটছে কলেজের পথে। সে তৃষা টোপনো। মালবাজারের পরিমল মিত্র মহাবিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রী তৃষা আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় অনুপ্রেরণার প্রতীক। বাবার মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরেছে এই চা বাগান শ্রমিক পরিবারের মেয়ে। বাবার টোটোই এখন তৃষার আশ্রয়। চা বাগানের মেয়ে চালাচ্ছে সংসারের চাকা, জয় করছে হৃদয়। কলেজের ক্লাস, সংসারের দায়িত্ব, ছোট ভাই-বোনদের পড়াশোনা…সব কিছু একাই সামলাচ্ছে তৃষা।
advertisement
বাবার হাতে শেখা টোটো চালানোই এখন তার জীবিকার একমাত্র ভরসা। সকালে কলেজ যাওয়ার আগে, আবার ক্লাস শেষে বিকেলে সে টোটো নিয়ে বেরিয়ে পড়ে যাত্রী তুলতে। যতটুকু ভাড়া আসে, তাতেই চলে সংসার। তৃষা জানায়, ‘বাবা বেঁচে থাকলে হয়তো এত বড় দায়িত্ব নিতে হত না। কিন্তু এখন পিছিয়ে যাওয়া মানে হেরে যাওয়া। পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চাই, তাই লড়ছি। চা বাগানের ধুলো মাটি মেখে থাকা তার প্রতিটি দিন যেন এক সংগ্রামের গল্প।
কলেজের পোশাক পরা তৃষাকে কখনও দেখা যায় টোটোর স্টিয়ারিং ধরে, কখনও যাত্রী তুলতে ব্যস্ত। তার ভিডিও বা ছবিগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে দ্রুত। নেটিজেনরা বলছেন, ‘তৃষা শুধু টোটো চালাচ্ছে না, চালাচ্ছে স্বপ্নের গাড়ি।’ তবে তৃষার স্বপ্ন একদিন সরকারি চাকরি করা। আর তার জন্যেই দিন রাত এত খাটনি। সবুজে ঘেরা চা বাগানের বুক চিরে ছুটে চলা এই তরুণীর জীবনের গল্প শেখায়, ইচ্ছাশক্তি থাকলে প্রতিকূলতাও পথ দেখায়!