রায়গঞ্জ ব্লকের রাঙাপুকুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। কচিকাঁচাদের সুর করা নামতায় রোজই সরগরম। এ ছবি অবশ্য নতুন নয়। তবে ভিতরে ঢুকলে দেখা মিলবে যে দিদিমণির, তাঁর পড়ানোর ভঙ্গিমা নতুন। হাত নয়, পা দিয়েই বোর্ডে লিখে চলেছেন এ ফর অ্যাপল, বি ফর ব্যাট। ছাত্রছাত্রীর প্রিয় শোভা দিদিমণি এভাবেই পড়ান।
জন্মের পর থেকে দু’টি হাতই পঙ্গু শোভা মজুমদারের। মনোবল বাড়াতে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মা। শিখিয়েছিলেন, জীবনে এগিয়ে চলতে গেলে প্রয়োজন ইচ্ছাশক্তি। সেই মন্ত্রেই পায়ে তুলে নিয়েছিলেন পেন্সিল। প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক।এরপর স্নাতকোত্তর। কম্পিউটার শিক্ষালাভ। সবটাই করেছেন পায়ের জোরে। প্রাথমিক স্কুলের চাকরি পেয়ে পা দিয়েই পড়াচ্ছেন শিশুদের।
advertisement
আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের সঙ্গে তিনি আলাদা নন। হার না মানার মানসিকতা আর মনোবলে ভর করে রোজনামচার জীবনেও পায়েই অভ্যস্ত শোভা।
সৃষ্টিতেই সুখ। জীবনের এই মন্ত্রকে পাথেয় করেছেন রাঙাপুকুরের দশভূজা। সামান্য প্রতিবন্ধকতায় দমে যান না দশভূজারা। প্রমাণ করেছেন শোভা মজুমদার।
ইচ্ছাশক্তির আলোয় কেটেছে প্রতিবন্ধকতার অন্ধকার। মাথা তুলে দাঁড়িয়ে সবার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলছেন শোভা। তাঁর দু’পায়েই দশ হাতের শক্তি। এই শক্তিতেই বধ হয়েছে পঙ্গুত্বের অসুর।