#শিলিগুড়ি: তৃতীয় দফার লকডাউন চলছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য ছাড় দিয়েছে রাজ্য। তবে এখোনও বন্ধ অধিকাংশ পরিষেবা। বহু দোকানপাটের ঝাঁপ বন্ধ। রাস্তায় চলছে না যানবাহন। বন্ধ রয়েছে সিটি অটো, টোটো, রিকশা। বন্ধ নির্মাণ কাজও। ফলে লকডাউনের জেরে চরম খাদ্য সংকটে ভুগছে একটা বড় অংশ। ওঁরা বিভিন্ন পেশার সঙ্গে জড়িত। সেইসব পরিষেবা এখোনো পুরোপুরি বন্ধ। এরকম দিনমজুর পরিবারগুলো আজ অসহায়। দু'মুঠো খাবারের খোঁজে প্রতিদিনই এদিক ওদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তাঁরা। ভরসা বলতে সরকারি রেশন। অনেকের আবার রেশন কার্ডও নেই।
advertisement
তাই আজ ওঁরা হন্যে হয়ে ছুটে বেড়াচ্ছে। শহরের একাধিক সহৃদয় ব্যক্তি এগিয়ে এসছেন নিজেদের সাধ্যমতো। এগিয়ে এসছে অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও। কিন্তু সংখ্যাটা যে বেশ বড়। আর লম্বা লকডাউন চলায় সমস্যা বাড়ছে। এবারে ওঁদের পাশে দাঁড়ালেন এক দম্পতি। শিলিগুড়ির শান্তিনগরের সরকার দম্পতি। আজ ওঁদের ছিল দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী। আর তাই পরিবার, আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে নয়। নিজেদের বিশেষ দিনটি ওঁরা কাটালো অসহায়, দরিদ্র, দুঃস্থদের সঙ্গে।
বাড়ির সামনেই প্যাণ্ডেল বানিয়ে আজ ওরা খাওয়ালেন ৭০০ জনকে। রীতিমতো সামাজিক দূরত্ব মেনে চলে এই প্রক্রিয়া। ব্যবহার করা হয় হ্যাণ্ড স্যানিটাইজারও। ওঁরা মানে সুজিত সরকার ও শ্রীদেবী সরকার। গত বছর প্রথম বিবাহবার্ষিকীতে পরিবারের সঙ্গেই আনন্দে কাটিয়েছিলেন। এবারেও ছিল অন্যরকম প্ল্যান। কিন্তু করোনা সব পরিকল্পনা বদলে দিয়েছে। করোনা মোকাবিলায় চলছে লকডাউন। লকডাউনের আজ ৪৩তম দিন। আর তাই গরিব, দুঃস্থদের সঙ্গেই দিনভর কাটালেন সরকার দম্পতি।
পেটপুরে খাওয়ালেন ওঁদের। কি ছিল মেনুতে? ভাত, ডাল, সোয়াবিনের তরকারি, ডিমের কারি। আর শেষ পাতে রসগোল্লা! এক এক করে ৭০০ জন লাইন করে এসে খেলেন। সকলেই দারুণ খুশি এহেন আয়োজনে। পাড়া পড়শিরাও সাধুবাদ জানিয়েছেন। আর সুজিত সরকার জানান, দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী বেশ ভালই কাটলো। এ এক অন্যরকম ভাল লাগা!