তখন সকাল। ভিডিও ভাইরাল হতেই শোরগোল। হেরিটেজ সেতুতে বিস্ফোরণ করালো কে বা কারা? পরিবেশপ্রেমী থেকে ডুয়ার্সের বিভিন্ন সংগঠন তখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলছে। কী হয়েছে করোনেশন সেতুতে? পুলিশ, প্রশাসনিক কর্তারা তখনও অন্ধকারে। শুরু হয় তদন্ত। আদপে কি ঘটেছে ঐতিহ্যবাহী এই সেতুতে?
ইংরেজ আমলে তৈরী এই সেতু বয়সের ভারে এখন অনেকটাই দুর্বল। ২০১১-র ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্থ হয় সেতুর একাংশ। পরবর্তীতে সেতুর পিলারেও ফাটল ধরে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন ডুয়ার্স ফোরামের কর্তারা। বিকল্প সেতু তৈরীর দাবীও উঠেছে। তার মধ্যেই সেতুতে বিস্ফোরণের ঘটনায় ক্ষুব্ধ একাধিক সংগঠন। তদন্তে জানা যায়, সেবকের হেরিটেজ করোনেশন সেতুতে চলছিল একটি হিন্দি ছবির শ্যুটিং। শ্যুটিংয়েই ছিল এই ব্লাস্টের দৃশ্য। যে সেতুর ওপর দিয়ে ১০ টনের বেশী পণ্যবোঝাই গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। তার ওপরে বিস্ফোরণের শ্যুটিংয়ের দৃশ্য কেন? প্রশ্ন তুলেছে ডুয়ার্স ফোরাম। ক্ষুব্ধ পরিবেশপ্রেমীরাও।
advertisement
আরও পড়ুন: রাস্তায় দাঁড়িয়ে ম্যাটাডোর, সন্দেহ বশেই ধরল পুলিশ! অভিনব কায়দায় থরে থরে সাজানো এ কী জিনিস!
ডুয়ার্স ফোরামের কর্তা চন্দন রায় জানান, হেরিটেজ সেতুটি একেই দুর্বল। কীভাবে সেতুর ওপর এই ধরনের শ্যুটিংয়ের অনুমতি? এ নিয়ে আন্দোলনে নামবো আমরা। শনিবার সেবক ফাঁড়িতে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে তারা।পরিবেশপ্রেমী দীপজ্যোতী চক্রবর্তীও ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। হেরিটেজ সেতুতে বিস্ফোরণের শ্যুটিং হল কীভাবে? প্রশ্ন তুলেছেন তিনিও।
আরও পড়ুন: তারাপীঠ থেকে রামপুরহাট কাণ্ডে গ্রেফতার আনারুল হুসেন
এ দিকে এই ছবির কর্তৃপক্ষকে এদিনই কালিম্পং থানায় তলব করা হয়। 'প্রশাসনিক অনুমতি ছাড়াই হেরিটেজ সেতুর ওপর শ্যুটিং করা হয়েছে', নিউজ 18 বাংলার কাছে টেলিফোনে তা স্বীকার করেছেন শ্যুটিং ইউনিটের ইনচার্জ শেফালী বন্দোপাধ্যায়। তিনি জানান, ছবি তৈরীর জন্যে ২৮০ জনের টিম এসেছে। গত ৯ মার্চ থেকে শ্যুটিং চলছে পাহাড়ের বিভিন্ন প্রান্তে। দার্জিলিং, রংলি ও রংলিয়েত, তাগদা, জামুনিতে শ্যুটিং হয়েছে। আজ ছিল শেষ পর্বের শ্যুটিং। ভোর সাড়ে চারটে থেকে সেবক জঙ্গলে। একেবারে শেষে গাড়ি বিস্ফোরণের দৃশ্যের শ্যুটিং। এ জন্যে একটি ভাঙাচোরা গাড়ি আনা হয়। তাতেই আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। প্রয়োজনীয় সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, জানান ইউনিট ইনচার্জ। তবে কোনও অনুমতি ছিল না।
কিন্তু কেন অনুমতি নেওয়া হল না? ইনচার্জ জানান, 'তাড়াহুড়োর জন্য অনুমতি নেওয়া হয়নি। সেবক ফাঁড়ির পুলিশ অনুমোদনের চিঠি নেয়নি। দুঃসাহস নিয়েই করেছি।'
Partha Sarkar
