সকাল থেকেই প্রচুর মানুষের ভিড়, চারিদিকে ঘন কুয়াশা থাকায় রাতভর উদ্ধার করতে কিছুটা সমস্যায় পড়তে হয়। তবে এই মুহূর্তে দ্রুত গতিতে চলছে সেই কাজ। এখনও পর্যন্ত কোনও যাত্রী আটকে রয়েছে কিনা ট্রেনের বগির ভিতরে ঢুকে শুরু হয়েছে তল্লাশি। এদিন সকালে ঘটনাস্থলে এসেছেন রেল মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব সহ কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বাড়লা, রেলের জেনারেল ম্যানেজার নর্থ ফ্রন্ট আনসুল গুপ্তা। দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনটিকে খতিয়ে দেখে আটকে থাকা বেশ কিছু যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী।
advertisement
নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য ও আহতদের পাশে থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন রেলমন্ত্রী রেল মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।
আরও পড়ুন: শেষ ফোনটা আর ধরা হয়ে ওঠেনি... জলপাইগুড়িতে স্বজনহারাদের কান্নায় ভারী মর্গের বাতাস
ইতিমধ্যেই রেলের লাইন সারাইয়ের কাজ শুরু করা হয়েছে এবং দুর্ঘটনাগ্রস্ত রেলের বগিগুলোকে রেল লাইন থেকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে সেই কাজ। জানা গেছে, ৪২-১ নম্বর পিলারের থেকে দুর্ঘটনার সূত্রপাত সেখান থেকেই রেললাইনের মাঝখানে যে কংক্রিটের স্লিপার দেওয়া থাকে সেই স্লিপার ভাঙতে শুরু করে, এরপরই রেল লাইনচ্যুত হয় বগির এবং একে একে ৫ টি বগি লাইন চ্যুত হয়ে পড়ে। প্রাথমিক ভাবে রেলের তদন্তে এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
যদিও সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, রেলের ইঞ্জিনের নীচের দিকে কোনও একপ্রকার সমস্যা দেখা দিয়েছিলো, তাই আগের স্টেশনেই রেলটিকে সতর্ক করা হয় এবং দাঁড় করিয়ে চালককে সেখানে বলা হয় এবং দেখাও হয়। তবে চালক জানিয়ে দেন সমস্যা নেই, ঠিক আছে এরপর ট্রেন স্টেশন থেকে ছাড়তে শুরু করে। পরবর্তীতে ময়নাগুড়ি দোমহনি ধল্লা সেতু পার করার পরেই ফের সমস্যা দেখা দিলে চালক তিনবার ব্রেক কষলে ট্রেনের গতি ঘণ্টায় ১০০ কিমির ওপরে থাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে পড়ে এমনটাই জানিয়েছে সেই ট্রেনের যাত্রীরা।
আরও পড়ুন: ময়নাগুড়িতে স্বয়ং মন্ত্রী, দুর্ঘটনায় কার জন্য কত ক্ষতিপূরণ রেলের?
উল্লেখ্য, ঘটনাস্থলে রাতেই বি এস এফ জওয়ান, আর পি এফ জি আর পি, জলপাইগুড়ি জেলা শাসক মৌমিতা গোদারা বসু, জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপার সহ রাজ্যের সেচ ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, আদিবাসী অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ দফতরের প্রতিমন্ত্রী বুলুচিক বড়াইক, প্রাক্তন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব, ধূপগুড়ি পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান রাজেশ কুমার সিং সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে অ্যাম্বুলেন্স সেখানে পাঠানো হয়। অন্যদিকে, দুর্ঘটনাগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে সাধারণ মানুষ এগিয়ে এসেছেন। ট্রেনের বগির ভিতর এখনও রয়েছে রক্তের দাগ। যাতে কোনও প্রকার সমস্যা না হয় তাই রাত থেকে জেলার ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত দান করতে ভিড় জমিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
রকি চৌধুরী